গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের কর্ণধার অনন্ত রায়। মহারাজা বলেই পরিচিত তিনি। তাঁকেই রাজ্যসভার সদস্য করেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার কোচবিহারে মোদীর সভা মঞ্চেও দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু মহারাজের প্রতি অনন্ত ভরসা বিজেপির সেই অনন্ত রায় কিন্তু মাঝেমধ্যেই বেফাঁস কথা বলে ফেলছেন তিনি। নিউজ ১৮ বাংলার প্রতিনিধির কাছে মুখ খুলেছিলেন অনন্ত রায়। প্রশ্নটা ছিল, তৃণমূল বলছে ৫ বছরে রাজবংশীদের জন্য বিজেপি কিছু করেনি। কী বলবেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে বোমা ফাটালেন অনন্ত মহারাজ। তিনি বলেন, এটা তো সত্য কথা কিন্তু কেন করেনি এটা আমি জানি না। আমার চোখে কোনও উন্নয়ন তো নজরে আসেনি। বিস্ফোরক অনন্ত মহারাজ।
এদিকে কেন রাজ্যসভার সদস্য করা হয়েছিল তা নিয়েও বিস্ফোরক জবাব দিয়েছেন অনন্ত মহারাজ। ওই সংবাদমাধ্য়মের তরফে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তৃণমূল বলছে ২৪এর ভোটে রাজবংশীদের ভোট আদায়ের জন্য অনন্ত মহারাজকে বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে মনোনীত করেছে। সেই প্রশ্নের জবাবে অনন্ত মহারাজ বলেন, ঠিকই বলছে।
এদিকে অনন্ত মহারাজ অবশ্য় এখনও পৃথক রাজ্য়ের দাবিতে অনড়। তিনি ওই সংবাদমাধ্য়মের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমাদের ইউটি ডিমান্ড নয়। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সরকারের কমিটমেন্ট। আমরা স্টেট চেয়েছি। কিন্তু কে বলছে সেটা সংবিধানের স্টেট সিডিউলে নেই। এটা তো স্টেট গভর্নমেন্ট করবে না। কেন্দ্রকেই করতে হবে।
এখানেই শেষ নয়। অনন্ত মহারাজ আরও বলেন, দল বার বার বলছে আমায় চুপ থাকতে। কিন্তু আমি তো মানুষের প্রতিনিধি। আমাকে নাচানো যাবে না। মানুষ চাইলে আমি সাংসদ পদ ছেড়ে দেব।
কিন্তু রাজ্যসভার সাংসদের মতো উপহার পাওয়ার পরেও কেন বার বার আলাদা রাজ্যের দাবি তোলেন অনন্ত? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যসভার সাংসদ হলেও অনন্ত মহারাজ কিন্তু গ্রেটারের কর্ণধার। সেখানে সর্বময় কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য পৃথক রাজ্য়ের দাবি তাঁকে তুলতেই হবে। সুর নরম করলেই জনভিত্তি টলে যাবে। ঠিক যেমনটা হয়েছে গ্রেটারের অপর পক্ষের নেতা বংশীবদনের ক্ষেত্রে। বংশীবদন বর্মন এবারও তৃণমূলের পক্ষে ভোট চাইছেন। কিন্তু পৃথক রাজ্য়ের দাবি নিয়ে তাঁর আগের মতো সেই আন্দোলনের ঝাঁঝ অনেকটাই কমে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে গ্রেটার সমর্থকদের মধ্য়ে নিজের কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলেও পৃথক রাজ্যের দাবিতে আজও অনড় অনন্ত মহারাজ।