ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পরের দিন আজ, শনিবার ডানকুনির সভা থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনটি দাবি রাখলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিনের জনসভায় বক্তব্যের শুরুতেই কমিশনের ৮ দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান তিনি। আর তৃণমূলকে কোভিডের থেকেও ভয়ঙ্কর বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর ভাইরাস তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। আর তারা যাতে অপরের ভোট নিজেরা না দিতে পারে তার জন্য নির্বাচন কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে। এবার ৮ দফায় নির্বাচন করা হচ্ছে।’
তবে নির্বাচন কমিশনের কাছে এদিনের সভার মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারী তিনটি দাবি রেখেছেন। তিনি জানান, গতকালই নবান্নে নির্বাচনী সেল গঠনের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। শুভেন্দুর প্রথম দাবি, ‘মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে কোনও নির্বাচনী সেল নবান্নে রাখা যাবে না। সেখানে তালা লাগাতে হবে।’ তাঁর দ্বিতীয় দাবি, ‘পুর প্রশাসকরা তৃণমূলের ক্যাডার। এই প্রশাসকদের সরাতে হবে। এদের রেখে এই নির্বাচন করা যাবে না।’
শুভেন্দুর তৃতীয় দাবিটি যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর। তিনি এদিন অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রত্যেক থানায় এবং রাজ্যস্তরে সিআইডি, এসটিএফ, আইবি— এরা প্রতিটি বিরোধী দলের নেতাদের সব কথা শোনে মোবাইল ফোন ট্যাপ করে। প্রত্যেক জায়গায় পার্টির নেতাদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতানেত্রীদের কথায় এ সব করা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর কথায়, ‘নির্বাচন কমিশনকে গোটা প্রশাসন খোলনলচে পাল্টে দিতে হবে। না হলে প্রত্যেক জেলায় আরাবুলের মতো, শওকত মোল্লা, জাহাঙ্গির খানেদের মতো নেতা থাকলে অবাধ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।’ পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের প্রতি শুভেন্দুর বার্তা, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে এবারের নির্বাচন অবাধ ভয়মুক্ত পরিবেশে হবে। মানুষ নিজের ভোট নিজে দেবে এবং বিজেপি–র সরকার তৈরি হবে।’
নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এদিন দলের কর্মীদের ‘ডু অর ডাই’ বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘আপনাদের ভোট করাতে হবে। বুথগুলিকে দূর্গের মতো আঁকড়ে রাখতে হবে। এখন থেকে ভেবে নিতে হবে পোলিং এজেন্ট কাকে করবেন। ডু অর ডাই। ১৯৪২ সালের ৯ আগস্ট গান্ধীজি যেমন বলেছিলেন, ইংরেজ তুমি ভারত ছাড়ো। সেই লড়াইয়ের মতো আমাদের লড়তে হবে।’
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকেও এদিন ছেড়ে কথা বলেননি শুভেন্দু। এদিন প্রশান্ত কিশোরের টুইটের কথা মনে করিয়ে তাঁকে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু। পিকে–র প্রতি শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘২ তারিখে পটনা যাওয়ার টিকিট আগের দিন রাতেই কাটতে হবে। লিখে রাখুন।’
উল্লেখ্য, এদিন সকালে প্রশান্ত কিশোর টুইটে লিখেছেন, ‘ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের আসল লড়াই হবে পশ্চিমবঙ্গে। এবং বাংলার মানুষের বার্তা স্পষ্ট। তাঁদের হাতেই রয়েছে তুরুপের তাস— আর তা হল— ‘বাংলা নিজের মেয়েকই চায়’। পুনশ্চ, আমার করা শেষ টুইট অনুযায়ী ২ মে আমার কথা মিলিয়ে নেবেন।’ তাই শুভেন্দুর কটাক্ষ, ২ তারিখের আগেই পটনা যাওয়ার টিকিট কাটবেন প্রশান্ত কিশোর।