একের পর এক জনসভা। তাও আবার একই দিনে। পায়ে প্লাস্টার আর সঙ্গী হুইল চেয়ার। প্রচণ্ড তাপকে মাথার উপর নিয়ে প্রথম দফার নির্বাচনের শেষবেলায় এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারসূচি। বৃহস্পতিবার জনসভা পাথরপ্রতিমার কলেজ মাঠে। সেখান থেকেই নাম না করে আব্বাস সিদ্দিকির দল আইএসএফঁ–কে তুলোধনা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আইএসএফ এখন বামেদের সঙ্গে জোট করেছে। সেই জোটে আছে কংগ্রেসও।
এই রাজনৈতিক সমীকরণকে সামনে রেখে আজ পাথরপ্রতিমা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির সঙ্গে ডিল করে একটা নতুন দল এসেছে। এটা বিজেপি থেকে গজিয়েছে হঠাৎ করে। বিজেপি টাকা দিয়ে তাদের পাঠিয়েছে সংখ্যালঘু ভোট কাটতে। যাতে নির্বাচনে বিজেপির সুবিধা করা যায়। কিন্তু বাংলার মানুষ তা হতে দেবে না।’ একদিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগণায় পা রেখে অমিত শাহ বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলে এই সুন্দরবনকে পৃথক জেলা করব। আর এখানে এইমস তৈরি হবে। এবার সেই প্রতিশ্রুতির জবাব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পাথরপ্রতিমা আমার ধ্যানে রয়েছে। সুন্দরবন আলাদা জেলা হবে আগেই বলেছি। নতুন করে কারো বলার অপেক্ষা রাখে না।’
একইসঙ্গে লাখো মানুষের স্বার্থে যে কাজ তিনি করেছেন তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘এখানে আগে যাতায়াতের সমস্যা ছিল। কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে সেতু তৈরি করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। ১৭টি নতুন সেতু হয়েছে সুন্দরবনে। ৫৩০০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা হয়েছে সুন্দরবনে। আড়াই হাজার টিউবওয়েল হয়েছে সুন্দরবনে।’ তার পরেই সুর সপ্তমে চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিজেপি পার্টির মতো ধান্দাবাজ নই, দাঙ্গাবাজ নই। আমি মানুষের জন্য কাজ করি। সবুজসাথীর সাইকেল পাবে ছেলেমেয়েরা। ছাত্রছাত্রীরা স্মার্টফোন পাবেন। দরজায় দরজায় রেশন পৌঁছে দেবো। কৃষক বন্ধুরা ভবিষ্যতে ১০ হাজার টাকা করে পাবে।’
এদিন তৃণমূলনেত্রী মনে করিয়ে দেন সেই ভয়ঙ্কর প্রলয়ের কথা। আমফান তার আগে বুলবুল। তিনি জানান, আমফানে ১৯ লক্ষ মানুষকে বাঁচিয়েছিলাম। থরথর করে কাঁপছিল নবান্ন। সারারাত জেগে পাহাড়া দিয়েছি। বুলবুলের সময়ে ২০ লক্ষ মানুষের ক্ষতি হয়েছিল। দুর্গতের সাহায্যে কোনও কার্পণ্য করিনি। আমরা সাত হাজার কোটি টাকা দিয়েছি আমফানে। আমি আপনাদের জন্য রিলিফ সেন্টার করে দিয়েছি। আমি মানুষকে জীবন দিয়ে ভালোবাসি। পিএম কেয়ারের নামে টাকা তোলা হয়েছিল। সেই টাকা কোথায় গেল? এখন বলছে, সরকারি কর্মীদের জন্য সপ্তম পে কমিশন দেবো। ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসে গ্র্যাচুয়িটি, পিএফ বন্ধ করে দিয়েছে সরকারি চাকরিতে। অসমে ১৪ লক্ষ মানুষকে ঘরছাড়া করেছে।