মেদিনীপুর আছে মেদিনীপুরেই। কারণ যেখানে নন্দীগ্রামের মতো কেন্দ্র থেকে প্রেস্টিজ ফাইট করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা পরই বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন রামনগরের বিধায়ক অখিলের পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী অখিল গিরি এই বিদ্রোহ করে বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছেন বলে মনে করছেন অনেকে। যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি পদে থাকা সুপ্রকাশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকাই ঠাঁই না পেয়ে ক্ষুব্ধ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কিন্তু অখিল গিরিকে প্রার্থী করা হয়েছে।
এবার বিধানসভা নির্বাচনে সুপ্রকাশ প্রার্থী বলে হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু দেখা গেল প্রার্থী তালিকায় ঠাঁই নেই সুপ্রকাশের। তখনই বিদ্রোহ করে নিজের ফেসবুকে সুপ্রকাশ লেখেন, ‘মজা করে বন্ধুরা বলত, পয়সা না থাকলে রাজনীতি করতে যাস না। আজ পারফরম্যান্সকে হার মানতে হল পয়সার কাছে। আজ বুঝলাম পারফরম্যান্সের কোনও দাম নেই এই যুগে।’ এই পোস্ট পরে মুছে দেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তারপরই তেখালির জনসমুদ্র থেকে নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অখিলের পরিবার এবং সুপ্রকাশকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছিলেন। জেলায় একের পর এক কর্মসূচি নিতে দেখা গিয়েছিল সুপ্রকাশকে। এমনকী তাঁকে জেলার যুব সভাপতি করা হয়। নন্দীগ্রামের সভা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে শুভেন্দুকে বলেছিলেন, ‘আগে সুপ্রকাশকে সামলাও। তারপর আমাকে হারাবার কথা ভেবো।’ কিন্তু এখন সুপ্রকাশই বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেছেন! তাহলে পূর্ব মেদিনীপুরে কী হবে? উঠছে প্রশ্ন।
অখিল গিরির ছেলের এই পোস্টের পর আরও একটি ঘটনা সামনে এসেছে। প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতার পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের জামাতা ইয়াসির হায়দর। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘একজন বুদ্ধিমান মানুষ আমাকে বলেছিলেন, তারকা বা বিখ্যাত হলে সহজেই টিকিট পাওয়া যায়। তখন গুরুত্ব দিয়ে শোনা উচিত ছিল আমার। যাঁরা বছরের ৩৬৫ দিন দলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন, তাঁদের উপেক্ষিতই থেকে যেতে হয়। এটাই কঠিন বাস্তব।’ সুতরাং মেদিনীপুর থেকে কলকাতা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সর্বত্র। নির্বাচনে এই পরিস্থিতিকে কমব্যাট করে এগিয়ে যাওয়া কঠিন বলেই অনেকের মত।