পয়লা বৈশাখের একদিন পরেই পঞ্চম দফার নির্বাচন। আর তার আগেই কৃষ্ণগঞ্জে সংযুক্ত মোর্চায় ফাটল দেখা দিল। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী আইএসএফের অনুপকুমার মণ্ডল তাঁর অনুগামী ও সমর্থকদের তৃণমূল কংগ্রেসে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আর তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কারণ বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক ও বিভেদকারী দল বলে কটাক্ষ করে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আর অনুপবাবু সিপিআইএম প্রার্থী ঝুনু বৈদ্যর বিরুদ্ধে কৃষ্ণগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সুবিধা হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
নদীয়ার একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের নিয়ে ক্ষোভ–বিক্ষোভ শুরু হয় বহুদিন থেকে। তার মধ্যে অন্যতম চাপড়া ও কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা। এখানে সিপিআইএম নতুন করে প্রার্থী দাঁড় করায়। চাপড়ায় আইএসএফ প্রার্থী কাঞ্চনা মৈত্রর পাশাপাশি জাহাঙ্গির আলি বিশ্বাসকে সিপিআইএম প্রার্থী করে। কৃষ্ণগঞ্জে আইএসএফ প্রার্থী অনুপকুমার মণ্ডলের পাশাপাশি সিপিআইএম ঝুনু বৈদ্যকে প্রার্থী করেছে। এই ঘটনায় জোট শরিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।
এই বিষয়ে অনুপবাবুর অভিযোগ, সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে আইএসএফ প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। নাম ঘোষণার পর আমি মনোনয়নপত্র জমা দিই। কিন্তু পরবর্তীতে সিপিআইএমের পক্ষ থেকে আমার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু আমি তা না করায় সিপিআইএম প্রার্থী দেয়। ঝুনু বৈদ্য মোর্চার প্রার্থী বলে এলাকায় দেওয়াল লিখন শুরু হয়। তাই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
অনুপবাবু ক্ষোভের সঙ্গে জানান, ঝুনু বৈদ্যকে প্রার্থী করায় সংযুক্ত মোর্চার অন্যান্য শরিকদের ভোট আমি পাব না। আবার সিপিআইএম প্রার্থী জিততে পারবে না। তাই সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস রুখতে পারবে বলে আমার মনে হয়। তাই আমার অনুগামীদের জোড়াফুলে ভোট দেওয়ার আহ্বান করেছি। আমার জামানত জব্দ হলেও দুঃখ পাব না। কিন্তু বিজেপিকে রোখার প্রয়োজন আছে।
বিজেপি প্রার্থী আশিসকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সংযুক্ত মোর্চার অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়ে কিছু বলব না। কিন্তু এলাকার মানুষ বিজেপিকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে ঠিক করে নিয়েছেন।’ সিপিআইএম প্রার্থী ঝুনু বৈদ্য বলেন, ‘উনি নিজের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। তবে আমার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগের কিছু জানি না।’ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ডঃ তাপসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘গত দু’বছরে এলাকার মানুষকে বিজেপি ঠকিয়েছে। ওঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। অন্যান্য বিরোধীরাও আমাদের সঙ্গে শামিল হলে তাঁদের গ্রহণ করা হবে।’