করোনা যোদ্ধাজের সম্মান জানাতে ফিভার নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল 100 Hours 100 Stars অনুষ্ঠান। এই ডিজিট্যাল ফেস্টে অংশ নিলেন তবলাবাদক উস্তাদ জাকির হুসেন। নিজের সঙ্গীত কেরিয়ার থেকে লকডাউন অভিজ্ঞতা নিয়ে মন খোলা আড্ডায় পাওয়া গেল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এই উজ্জ্বল তারকাকে।
সঙ্গীত তাঁর জিনের মধ্যে রয়েছে। প্রসিদ্ধ তবলাবাদক,আল্লা রাখার পুত্র জাকির হুসেন।আপতত মার্কিন মুলুক নিবাসী এই সঙ্গীতশিল্পী। ক্যালিফোর্নিয়া থেকেই লাইভ আড্ডায় সেখানকার করোনা পরিস্থিতির কথা শেয়ার করলেন এই উস্তাদ। তাঁর মতে, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই দুই দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্ল্যানিং একদম ভিন্ন। সেদেশে টিস্যু পেপার, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চাহিদা আকাশছোঁয়া। করোনা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে সাংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন তিনি। পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করে এবং পরিবারের সঙ্গে আড্ডা দিয়েই কাটছে দিনের বেশিরভাগ সময়টা, আরজে রোহিনীকে বললেন উস্তাদ জাকির হুসেন।
জাকির হুসেনের মতে, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে যিনি বিশ্বের দরবারে সবার প্রথম পৌঁছে দিয়েছেন তিনি রবিশঙ্কর। ‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রথম সুপারস্টার রবিশঙ্কর। আমাদের প্রজন্মের সব শিল্পী ওঁনাকে দেখে অনুপ্রেরণা নিয়েছে’, অকপট স্বীকারোক্তি এই মিউজিক ম্যাস্ট্রোর। তাই বলে এমন নয় যে রবিশঙ্করের আগে তাঁর মতো প্রতিভাশালী সঙ্গীত তারকার অভাব ছিল এই দেশে। তাঁর কথায়, তাঁরা প্রচারের আলো থেকে দূরে থেকেছেন। জাকির হুসেনের বাবা আল্লা রাখা তবলায় সঙ্গত করতেন রবিশঙ্করকে।ছোট থেকেই পন্ডিতজিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন জাকির হুসেন। একসঙ্গে স্টেজ শেয়ার করেছেন তিনি। রবিশঙ্কর ভীষণ সিম্পল এবং রসিক মানুষ ছিলেন জানান উস্তাদ জাকির হুসেন।
ছেলেবেলার স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি বলেন,'আমার আজও মনে পড়ে সেই দিনগুলো যখন একদম ঘরোয়া পরিবেশে আব্বার সঙ্গে মহফিলে যেতাম তবলায় সঙ্গত করতে। আব্বা যখন বাইরে খাবার খেত আমরা সব মিউজিশিয়ানরা রান্নাঘরে অপেক্ষা করতাম।এরপর টিফিন বক্স বোঝাই করে সবাই বাড়ির জন্য খাবার নিয়ে আসতাম। আব্বা বলত তবলা সরস্বতীর মতো পূজনীয়, সবসময়ই এঁর সম্মান করতে হয়। আমি বারো বছর বয়স থেকে তবলা বাজানো শুরু করেছি'।
দুবার গ্র্যামি সম্মানেও ভূষিত হয়েছেন তিনি। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সঙ্গীতে অবদানের জন্য পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ এবং সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি সম্মান পেয়েছেন জাকির হুসেন।
100 Hours 100 Stars অনুষ্ঠান থেকে সংগৃহীত অর্থ করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য সরাসরি দান করা হচ্ছে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে।