রাজনৈতিকভাবে তাঁদের অবস্থান ভিন্ন মেরুতে। তবে সবার আগে তাঁরা অভিনেতা। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন চালু হলে বাকি সব গৌণ। বাংলা ছবির স্বার্থে হাত মিলিয়েছেন দুজনে। তবে শুধু পর্দাতেও তাঁদের সৌহার্য আটকে নেই। অফস্ক্রিনেও পরস্পরকে অগাধ শ্রদ্ধা আর স্নেহের সম্পর্ক মিঠুন ও দেবের। পর্দায় তৃণমূল সাংসদ দেবের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। আর দুর্নীতি ইস্যুতেও পর্দার ছেলের পাশেই দাঁড়ালেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।
কিছুদিন আগেই ব্রেন স্ট্রোকের শিকার মিঠুনকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন দেব। মমতা-অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক সেরেই পৌঁছেছিলেন হাসপাতালে। কারণ মিঠুনদা তাঁর কাছের মানুষ। রাজনীতির রং আলাদা হলেও দুজনের সম্পর্ক অটুট। সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় ইডি দ্বিতীয়বারের জন্য তলব করেছে ঘাটালের সাংসদকে। সেই প্রসঙ্গে শুক্রবার মুখ খুললেন মিঠুন চক্রবর্তী। দেবের পাশেই দাঁড়ালেন তিনি।
এদিন ‘মহাগুরু’ মিঠুন এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে দেখতে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে দেব-মিমি, সব প্রসঙ্গেই খোলামেলা জবাব দিলেন। দেব-কে এই মাসের ২১ তারিখ দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দিতে হবে। সেই প্রসঙ্গে মিঠুন বলেন, ‘আমি বিষয়টা নিয়ে ওয়াকিবহাল নই। আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন তা হলে বলব, দেব ওই রকম ছেলেই নয়। এটা আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলছি। কিন্তু যে হেতু এটা (ইডি) একটা সংস্থা, তারা তাদের অফিসিয়াল ডিউটি করছে। এটা দেবের ব্যাপার, দেব কী করবে।’
ওদিকে দেব ইডি-র তলব প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। তৃণমূল সাংসদ স্পষ্ট বলেন, ‘দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি আমার কর্তব্যকে সবচেয়ে এগিয়ে রাখি। আমি আমার কর্তব্য পালন নিশ্চয় যাব’।
প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের আওতায় ডেকে পাঠানো হয়েছে দেবকে। গরু পাচার মামলায় গত বছর গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল। এখন তাঁর ঠিকানা তিহাড় জেল। এই মামলাতেই বেশ কিছু কাগজপত্র নিয়ে দেবকে হাজিরা দিতে বলেছে ইডি। ২০২২ সালেও একই মামলায় দেবের বয়ান রেকর্ড করেছিল ইডি। পাশাপাশি ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দেবকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। কলকাতায় সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, গরু পাচারকাণ্ডে বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরা করার সময় দেবের নাম উঠে এসেছিল, সেই কারণেই ডাক পড়ে তারকার।
রাজনীতির ময়দানে ফেরার ইঙ্গিত স্পষ্ট করেছেন দেব। রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেওয়াতেই মানুষের স্বার্থে ফেরার কথা জানিয়েছেন দেব। তার মধ্যেই দেবকে ইডির এই তলব নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।