জঙ্গি হামলায় উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন। গত শুক্রবার গভীর রাত থেকেই জল, স্থল ও আকাশ পথে ইজরায়েলের উপর হামলা চালায় প্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। পাল্টা জবাব দেয় ইজরায়েলি সেনা। তবে এই সংঘর্ষে প্রাণ যায় দুই দেশেরই প্রায় ৪ হাজার সাধারণ নাগরিকের। এদের মধ্যে রয়েছেন টেলি অভিনেত্রী মধুরা নায়েকের তুতো বোন ও ভগ্নিপতি। তাঁদের দুই সন্তানের সামনেই নৃশংসভাবে খুন করা হয় মধুরার বোন ও ভগ্নিপতিকে। প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা, দুশ্চিন্তার মধ্য়েই আপাতত দিন কাটছে মধুরা নায়েকের। ভয়ঙ্কর এই ঘটনা এবং এই যুদ্ধের কারণে নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে Hindustan Times-এর কাছে মুখ খুলেছেন মধুরা নায়েক।
মধুরা জানান, তাঁর বাবা হিন্দু, আর মা ইজরায়েলের নাগরিক। তাই তিনি নিজের জীবনে বহু ঝড়, বহু চড়াই-উতরাই দেখেছেন। এখনও অভিনেত্রীর ৩০০ জন আত্মীয় ইজরায়েলে আটকে রয়েছেন। মধুরার কথায়, ‘আমার পরিবার আমাকে ওঁদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জানায়। এর ২৪ ঘন্টা পরে তাঁদের মৃতদেহ শনাক্ত করা যায়। আমার বোন ও ভগ্নিপতির গাড়িতেই ছিল ওঁদের দুই সন্তান। কর্মরত সেনা অফিসাররা ওদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়।’ কথা বলতে বলতেই গলা ধরে আসে মধুরা নায়েকের।
আরও পড়ুন-চর্চায় 'খুফিয়া'! টাবুর সঙ্গে চুম্বনের দৃশ্যের শ্য়ুটিং নিয়ে অকপট বাঁধন
মধুরা জানান, তাঁর দিদা একজন ইহুদি ছিলেন, তিনিও তাই। তাঁর কথায়, ‘আসলে দুর্ভাগ্যবশত ইজরায়েলে পরিস্থিতি সবসময়ই এমনই ছিল, আমরা এই ধরনের অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। আমার পরিবার উদ্বিগ্ন যে পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। আমার মনে হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। আমি নিরাপত্তার কারণে আমি এখন কোথায় আছি তা জানাতে পারছি না, আমার কোন সদস্যরা ইজরায়েলে আটকে আছেন সেটাও আমি আপনাদের এখন বলতে পারব না। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইহুদিদের উপর হামাসের আক্রমণের কথা বলে অনেক সাম্প্রদায়িক ঘৃণা পেয়েছি। আমি মর্মাহত যে লোকজন সহানুভূতি দেখানোর বদলে নোংরা আক্রমণ করছেন। কত নিরাপরাধ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। ওঁরা এটা বোঝে না যে প্রাণ আসলে সাধারণ মানুষের যায়। এটা একটা সন্ত্রাসবাদী হামলা, মুম্বইতে যা ঘটেছিল, ২৬/১১র মতোই'।
মধুরার কথায়, ‘শুধু নোংরা আক্রমণ হয়। বেশকয়েকদিন ধরে আমি হুমকিও পেয়েছি।’ ভারতের প্রশংসা করে অভিনেত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সমস্ত জায়গায় সমস্ত ইহুদিদের নিরাপদে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভারতে অত্যন্ত নিরাপদ, দেশের সরকার আমাদের খুব সমর্থন করে। যদি এমন কোনও কঠিন পরিস্থিতি ঘটে, আমি জানি আমি কী করব। আমি সরকারে পূর্ণ সমর্থন পাব। এখানে ইহুদি ও হিন্দু দুই ধর্মের মানুষই সুন্দরভাবে রয়েছেন। আমি শুধু সবার নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছি।’