দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি রয়েছে। অসহনীয় গরমে কাহিল সকলে। একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৪০-এর বেশ খানিকটা উপরে। দাবদাহের এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ মিলছে না! এই অস্বস্তিকর পরিবেশের খবর যারা পৌঁছে দিচ্ছেন রেহাই নেই তাঁদেরও। তীব্র গরমের চোট লাইভ সংবাদ পাঠের মাঝেই জ্ঞান হারালেন কলকাতা দূরদর্শনের সংবাদ পাঠিকা লোপামুদ্রা সিনহা। বাংলা টেলিভিশনের অতি পরিচিত মুখ তিনি। মিঠাই-সহ লোপামুদ্রা কাজ করেছেন একাধিক হিট মেগায়।
সিরিয়ালের এই পরিচিত অভিনেত্রী দীর্ঘদিন দূরদর্শনে সংবাদ পাঠ করছেন। শুক্রবার নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো আপলোড করে অসুস্থতার কথা জানান লোপামুদ্রা নিজেই। তিনি ফলোয়ার্সদের জানান, গত ১৮ই এপ্রিল অর্থাৎ শুক্রবার সকালে নিউজ বুলেটিন পড়বার সময় মারাত্মক গরমে অসুস্থবোধ করেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘লাইভ নিউজ চলার সময় আমার বিপি (রক্তচাপ) মারাত্মক কমে যায়, আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। বেশকিছুক্ষণ ধরেই আমার শরীর খারাপ লাগছিল, মনে হচ্ছিল একটু জল খেলে ঠিক হয়ে যাবে। আমি কোনওদিন জল নিয়ে সংবাদ পড়তে বসি না। সেটা ১০ মিনিটের নিউজ হোক বা আধ ঘন্টার, কখনও প্রয়োজন পড়েনি।…. ফ্লোর ম্যানেজারকে ইশারা করে জলের বোতল চাই। কিন্তু কাল সেই সময় জেনারেল স্টোরি যাচ্ছিল, কোনও বাইট চলছিল না। ফলে আমি জলটা খেতে পারচ্ছিলাম না। অবশেষে একটা বাইট আসায়, জলটা অবশেষে খাই’।
এরপর লোপামুদ্রা আরও জানান, ‘আমার মনে হয়েছিল বাকি চারটে নিউজ স্টোরি আমি শেষ করতে পারব। দুটো কোনওরকমে কমপ্লিট করি, তিন নম্বরটা হিট ওয়েভের ওপর স্টোরি ছিল। সেটা পড়বার সময়ই আমার আস্তে আস্তে কথাটা জড়িয়ে যাচ্ছিল। আমি ভেবেছিলাম আমি শেষ করতে পারব, নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু না…অসুস্থতা তো বলে কয়ে আসে না। ওই স্টোরিটার সময় আমি আর দেখতেই পাচ্ছিলাম না। টেলিপ্রমটারটা আবছা হতে হতে শেষে আমি ব্ল্যাকআউট হয়ে যাই..’।
নিজের ২১ বছরের কেরিয়ারে এই প্রথম এমন ঘটনার সম্মুখীন হলেন লোপামুদ্রা। ওই সময় তাঁর নিউজ প্রোডিউসার তৎক্ষণাৎ বুলেটিন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। পেশাদার সংবাদ পাঠিকা হিসাবে সেই আফসোস লোপামুদ্রার রয়েছে। প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়ে নেন অসুস্থ লোপামুদ্রা। সঙ্গে জানান, ‘আমার ভুল হয়েছিল, সঙ্গে জল বা ORS রাখা উচিত ছিল’।
এমনিতে দূরদর্শনের নিউজ ফ্লোর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হলেও ওইদিন সেটি কাজ করছিল না, জানান সঞ্চালিকা। ফলে ফ্লোর মারাত্মক গরম হয়ে পড়েছিল। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওআরএস, খাবার খাইয়ে চিকিৎসকের নিয়ে যাওয়া হয় লোপামুদ্রাকে। এই গরমে সবাইকে শরীরের যত্ন নিতে বলেন সঞ্চালিকা। পাশাপাশি চারিদিকে গাছ লাগানোর বার্তা দেন তিনি।