এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম পরিচিত মুখ আরাত্রিকা মাইতি। ‘মিতুল মা’ থেকে 'রাই' হওয়ার সফর এক পলকেই পার করেছেন তিনি। ‘খেলনা বাড়ি’ শেষ হওয়ার পরই একই চ্যানেলে শুরু হয়েছে আরাত্রিকার নতুন মেগা ‘মিঠিঝোরা’। রাই হিসাবেও দর্শকদের অফুরান ভালোবাসা কুড়োচ্ছেন ১৯ বছরের অভিনেত্রী। নতুন ইনিংস নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার মুখোমুখি আরাত্রিকা মাইতি।
এত দ্রুত নতুন মেগায় ফেরা। আশা করেছিলেন?
আরাত্রিকা: আমার মনে হয় পুরোটাই কপাল! এই কাজটা হবে কী হবে না, সেই নিয়ে অনেক কিছু চলেছিল। মাঝে বেশ কিছু ওয়েব সিরিজের কাজও হাতে এসেছিল। তবে আমার মনে হয় এটা (মিঠিঝোরা) আমার ভাগ্য়ে লেখা ছিল। একটা কথা বলব, কোনও ফ্লোর আমাকে খালি হাতে ফেরায়নি। প্রথম সিরিয়াল শেষ হওয়ার আগেই আমি ‘খেলনা বাড়ি’ পেয়ে গিয়েছিলাম। সেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই বেশকিছু সিনেমা, ওয়েব সিরিজের অফার ছিল। যে গুলো হয়নি তা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। বলব, আমার কপালে এটাই লেখা ছিল। এত তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করব নিজেও ভাবতে পারিনি।
‘খেলনা বাড়ির’ মিতুলের চেয়ে 'মিঠিঝোরা' রাই কতটা আলাদা?
আরাত্রিকা: অনেকটা। কোথাউ গিয়ে কিছুু মিল তো অবশ্যই আছে। সেইটুকু মিল তো প্রত্যেক মেয়ের মধ্যে থাকে। দু'জনেই পরিবারকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। নিজের চেয়ে বেশি পরিবারকে প্রায়োরিটি দেয়। মিতুলের মধ্যে যেটা ছিল না, সেটা পড়াশোনা। রাই কিন্তু শিক্ষিতা, মার্জিত। ওর সব কাজের মধ্যে সেটা ফুটে ওঠে। রাইও কিন্তু খুব প্রাণোচ্ছ্বল মেয়ে। পরিবারটাকে মাতিয়ে রাখে। দায়িত্ব নিতে পছন্দ করে। মিতুল বিশ্বাসী ছিল, অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে। মুখে কাজ না হলে পেটাতে হবে। রাই কিন্তু লাঠি দিয়ে, বাঁশ দিয়ে কাউকে পেটায় না। প্রত্যেক বাড়িতেই একটা রাই থাকে। আমাদের খুব পরিচিত একটা চরিত্র রাই।
বোনের জন্য স্বার্থত্যাগের গল্প বাংলা টেলিভিশনে কমন। প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেলের মেগা ‘সন্ধ্যাতারা’র সঙ্গেও তুলনা চলছে। সেটা নিয়ে কী বলবেন?
আরাত্রিকা: বোনেদের নিয়ে অনেক সিরিয়াল হয়েছে। সবার চেয়ে এই সিরিয়ালটা আলাদা। বোনদের নিয়ে সিরিয়ালটা হলেও গোটা পরিবারটাই মূল ফোকাস। এটা উত্তরবঙ্গের একটা বনেদি পরিবারের গল্প। এখানে আমার দাদা-বৌদি রয়েছেন, তাঁদের মেয়ে, মা-পিসিমণি আছেন এবং অবশ্যই এতদিন বাবাও ছিলেন। প্রত্যেককে নিয়ে গল্প। আরেকটা আলাদা ব্যাপার হল, বোনেদের নিয়ে গল্প হলে দেখা যায়, কেউ খারাপ বা গ্রে শেড রয়েছে। এখানে কিন্তু কেউ কোনওদিন রাইকে দোষারোপ করে না। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমাদের সিরিয়ালে কোনও ভিলেন নেই। এখানে সবাই ভালো। রাই কিছু ভুল করলে বোনেদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়, আমাদের সিরিয়ালে কিন্তু তেমনটা নয়। রাইকে সবাই ভালোবাসে। আমি এখনও পর্যন্ত যতদূর স্টোরিলাইন জানি, যা শ্যুট করেছি তাতে আমার মনে হয়নি কোনও মিল রয়েছে (সন্ধ্যাতারার সঙ্গে)। রাই কীভাবে গোটা পরিবারকে টানতে নিজের ভালোবাসার বলিদান দিচ্ছে, সেটাই আসল। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারটা চলবে কী করে? সেই টানাপোড়েনটাই এখানে মূল। আর্থিক টানাপোড়েনে গোটা পরিবারের লড়াইটা উঠে আসবে। তার সাথে অন্য মেগার মিল রয়েছে বলে আমার মনে হয় না।

শৌর্য-নীলুর বিয়ে সম্পন্ন!
রাইয়ের মতো আরাত্রিকা নিজের ভালোবাসার বলিদান দিতে পারবে?
আরাত্রিকা: এই রে! কঠিন প্রশ্ন। জীবনে ভালোবাসা এলে আমি এর উত্তর দিতে পারব। পরিস্থিতি অনেক কিছু শেখায়। রাইয়ের ক্ষেত্রে সেটা ঘটেছে। রাই জানে ও বিয়ে করলে বাপের বাড়িটা চলবে না। তাই বোনকে বিয়ে দিয়ে ও নিজে সংসারটা টানতে চায়। আমি জানি না পরিস্থিতির শিকার হলে আমি কী করব। রাই পরিস্থিতির শিকার হয়ে বদলেছে, সব মানুষই বদলায়।