অনেক গল্পই অজানা থেকে গেল। অনেক কাহিনি অস্পম্পূর্ন রেখে চলে গিয়েছেন সুশান্ত সিং রাজপুত। দেখতে দেখতে ১০৮ দিন অতিক্রান্ত, তবুও ১৪ জুনের ওই অভিশপ্ত দুপুরে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর খবরটা আজও যেন দুঃস্বপ্ন বলেই মনে হয় প্রয়াত অভিনেতার ভক্তদের। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর। ঠিক চার বছর আগে আজকের দিনেই মুক্তি পেয়েছিল সুশান্ত সিং রাজপুতের কেরিয়ারের অন্যতম হিট ছবি ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। অনেকের মতেই সুশান্তের কেরিয়ারের সেরা ছবি এটি।
যে নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে অবলীলায় পর্দার মাহি হয়ে উঠেছিলেন সুশান্ত, তাঁকে কুর্নিশ না জানিয়ে বোধহয় থাকা যায় না। সিনেমা হলে যত ধোনি ভক্ত এই ছবি দেখতে ঢুকেছিলেন তাঁরা বেরিয়ে আসার সময় ফ্যান হয়ে গিয়েছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের। ধোনির ম্যানারিজম থেকে তাঁর হেলিকপ্টার শট-নিঁখুতভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত! আজ সবই স্মৃতির পাতায়।
পরিচালক নীরজ পাণ্ডের এই ছবির প্রস্তুতিতে জান লড়িয়ে দিয়েছিলেন সুশান্ত। যে ছেলেটা স্কুলের ক্রিকেট টিমেও নিয়মিত জায়গা পেত না-তাঁর পক্ষে ধোনির প্রতিবিম্ব হয়ে উঠা সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু সহজ পথের পথিক ছিলেন না সুশান্ত সিং রাজপুত, ধোনি হয়ে উঠতে নিয়েছিলেন কড়া প্রশিক্ষণ।
এম এস ধোনি:দ্য আনটোল্ড স্টোরির ট্রেলার লঞ্চের মঞ্চে সেই কথা নিজেই মেনে নিয়েছেন ভারতের ক্যাপ্টেন কুল। জানা যায় ধোনিকে প্রশ্ন করে করে একটা সময় নাজেহাল করে দিয়েছিলেন সুশান্ত, কারণ ২৫০ প্রশ্নের তালিকা তৈরি করেছিলেন অভিনেতা নিজে। যেখানে ব্যক্তিগত জীবন থেকে পেশাদার জীবন নিয়ে ছিল প্রশ্ন। একই প্রশ্নকে নানাভাবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে করতেন সুশান্ত।
সাংবাদিকরা ধোনিকে প্রশ্ন করেছিলেন বায়োপিক নিয়ে কতটা নাভার্স তিনি? স্বমহিমায় ধোনি বল ঠেলে দিয়েছিলেন সুশান্তের কোর্টে। বলেছিলেন, সুশান্ত আমার চেয়ে বেশি নার্ভাস কারণ ওকে ফুটিয়ে তুলতে হবে আমার ভিতর কোনসময় ঠিক কী চলছিল,দর্শককে সেটা বিশ্বাস করাতে হবে। আর সেটা করতে গিয়ে সত্যি বলছি আমাকে জ্বালিয়ে খেয়েছে ও। আমি ওই সময় কী ভাবছিলাম, ওই মুহূর্তটায় কী ফিল করছিলাম..বাপ রে! আমি তো বলেই ফেলেছিলাম.. ভাই তুই এত প্রশ্ন কেন করিস? বাস্তবকে কিন্তু আমরা প্রয়োজনের চেয়ে কম সময় কাটিয়েছি'।
সুশান্ত বলেন,'আমি একবারই এমএসকে ওর কুল হারাতে দেখেছি। প্রথম দু,তিন দিন যখন আমি ছিলাম ওঁনার সঙ্গে মাহি খুব শান্তভাবে,স্থিরভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। তবে তারপর বলল,তুই বড্ড প্রশ্ন করছি,আমি দু মিনিটে আসছি'। নিজের ডিফেন্সে মাহি বলে উঠেন, ‘একই প্রশ্ন ও বিভিন্নভাবে করত, প্রথমে একভাবে তারপর অন্যভাবে, নিজের সম্পর্কে কথা বলা দীর্ঘক্ষণ ধরে..সম্ভব মানুষের পক্ষে, অদ্ভুত লাগত’।
সুশান্তের স্বপ্ন ছিল ধোনির সঙ্গে গলি ক্রিকেট খেলার। ধোনি ব্যাট করবে আর কিপিংয়ের দায়িত্বে থাকেন সুশান্ত। অধরা রয়ে গেল এই স্বপ্ন, কারণ সবকিছু ছেড়ে এখন না-ফেরার দেশে। ধোনির গল্পটা বলে গেলেও, নিজের কাহিনিটা আনটোল্ড রেখেই চলে গেলেন সুশান্ত সিং রাজপুত।