ছেলে রৌনককে একা হাতেই বড় করেছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। খাতায় কলমে আলাদা না হলেও, বরের থেকে আলাদাই থাকেন রচনা। রচনা ও তাঁর স্বামী প্রবাল বসুর একমাত্র সন্তান রৌনাক ওরফে প্রনীল। কড়া মা রচনা। টিভির কাজ সামলেও, ছেলের সব দিকে নজর থাকে তাঁর। সেট থেকে তড়িঘড়ি বাড়ি ফেরেন রৌনককে পড়তে বসাতে হবে এই চিন্তায়।
সম্প্রতি দিদি নম্বর ১ খেলতে এসেছিল সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। সেখানে সুদীপা জানান, রচনা আর তাঁর মেকআপ রুম ছিল পাশাপাশি। দেখতেন রচনার মেকআপ রুমে ঝোলানো থাকে বোরখা। একদিন সুদীপা জানতে চান, কেন রচনার ঘরে ঝোলানো থাকে বোরখা। তাতে জানতে চান সেট থেকে বেরিয়ে সোজা মেট্রো স্টেশনে যান অভিনেত্রী। পরে নেন বোরখা। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে ধরেন পাতাল রেল। এরপর কালীঘাট স্টেশনে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। সেটা চড়ে ফেরেন। একটাই কারণ যাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে ছেলেকে পড়তে বসাতে পারেন।
সুদীপার কথায়, ‘আমি সেদিন রাতে ফিরে রচনাদিকে ম্যাসেজ করেছিলাম আশীর্বাদ করো যেন তোমার মাতৃত্বের ৫০ শতাংশ আমি পাই।’ এরপর রচনার কাছে জানতে চান, মাতৃত্বের কোন সময়টা তাঁর কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের।
যতে রচনার উত্তর, ‘এই এখনের সময়টা। যুগ বদলে গেছে। আমি খুব ভয়ে ভয়ে পা ফেলি। আমি আমার বাবার থেকে সব কাজ পারমিশন নিয়ে করতাম। বাবা মারা যাওয়ার দু বছর আগে অবধিও তাই ছিল। আমি যেহেতু এভাবে মানুষ তাই আমার মেনে নিতে কষ্ট হয় যে আমাকে আমার ছেলে মুখের উপর জবাব দেবে। এমন নয় ও খারাপ। পরিবেশই সেরকম। নিজেদের দুনিয়ায় খুব ব্যস্ত। সব শুনছে। করছে সেটাই যেটা ও ভাবছে। এই সময়টা খুব কঠিন। নিজেকে বদলাতে হবে। ওদের মতো করে নিজেদের বদলে নিতে হবে এই সময়। ওদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে তোমাকে।’
অভিনয় থেকে বর্তমানে অনেকটাই দূরে। রচনা জানিয়েছিলেন ছেলে রৌনকের কথা ভেবেই তাঁর সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া। তবে দীর্ঘ বছর ধরে তিনি দিদি নম্বর ১-এর সঞ্চালিকা। এর পাশাপাশি সফল ব্যাবসায়ীও। খুলেছেন শাড়ি আর বিউটি প্রোডাক্টসের ব্যবসা। আর ছুটিছাটা পেলেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন ছেলেকে নিয়ে। মাতৃত্বের প্রতিটা ধাপ চুটিয়ে উপভোগ করছেন কেরিয়ার সামলেও। এমনকী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, স্বামীর থেকে ডিভোর্স না নেওয়ার সিদ্ধান্তও ছেলের কথা ভেবেই। কখনও চাননি ছেলের গায়ে লেগে যাক ডিভোর্সি মা-বাবার ট্যাগ। প্রবালের থেকে আলাদা থাকলেও, ছেলেকে নিয়ে একসঙ্গে সময় কাটান দরকারে। খেতে যান রেস্তোরাঁয়, অথবা ঘুরতে।