সালটা ২০০৩, পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হন ভিকি কৌশলের বাবা শ্যাম কৌশল। চিকিৎসকরা তাঁকে জানিয়ে দেন, যে তিনি আর বাঁচবেন না। সম্প্রতি সেই খারাপ সময় নিয়েই মুখ খুলেছেন শ্যাম কৌশল। জানিয়েছেন, সেসময় তাঁকে মুম্বইয়ের নানাবতী হাসপাতালে ভর্তি হন, সেখানেই বায়োপসি করা হয় তাঁর।
সম্প্রতি একটি টক শোয়ে হাজির হয়েছিলেন ভিকির বাবা শ্যাম কৌশল। যিনি কিনা বি-টাউনের নামী অ্যাকশন ডিরেক্টর। ‘দঙ্গল’, ‘বাজিরাও মস্তানি’ সহ বহু ছবির অ্যাকশন ডিরেক্টর তিনি। শ্যাম কৌশল জানান, তিনি তখন ফারহান আখতারের ‘লক্ষ্য’ ছবির শ্যুটিংয়ে লাদাখ-এ ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে বুঝতে পারেন, তাঁর পেটে নানান সমস্যা হচ্ছে। আর তারপরই তিনি চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
শ্যাম কৌশলের কথায়, ‘সেসবছর অক্টোবরের কিছু সময় পরে আমি নানাবতী হাসপাতালে ভর্তি হই। ডাক্তাররা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে আমি বাঁচব না। আমি সেটা মেনে নিয়েও নিজের আশাকে মরতে দিইনি কখনও। তখন ভিকির বয়স ১৫, আর সানির ১৪। আর আমার বয়স ছিল ৪৮। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি। বলেছি যে যদি আমি জীবনে অনেক কিছু অর্জন করেছি, যদি আপনি আমায় বাঁচাতে চান, তাহলে যেন আমি দুর্বলের মতো না বাঁচি। সেদিন ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনেছিলেন। আমি ভয়কে জয় করে সুস্থ হয়ে উঠি। আমার অস্ত্রোপচার হয়, টানা ৫০ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর আমায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপরও আমায় ১ বছর পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা। সেবছর আমি একাধিক পুরস্কার জিতেছি, আমার সন্তানরাও আজ সফল। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আর ক্যানসার ছড়ায়নি।’
ক্যানসার মুক্তির পর জীবনের আরও ২০টা বছর পার করে ফেলেছেন শ্যাম কৌশল। এর আগে ই-টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, শ্যাম কৌশল জানিয়েছেন, সেসময় তিনি আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমি তো একপ্রকার ঠিক করেই ফেলেছিলাম হাসপাতালের তিন তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিজের জীবন শেষ করব। কারণ, ওভাবে আমি কোনওদিনই বাঁচতে চাইনি। সেবার পেটের অস্ত্রোপচারের কারণে বিছানা থেকে ওঠার অবস্থায় আমি ছিলাম না। ঈশ্বরকে বলি, ’দয়া করে এটা শেষ করে দিন। কোনও আফসোস নেই আমার। গ্রাম থেকে এসেছি, আমনার আশীর্বাদে অনেক কিছু করেছি। কিন্তু আপনি যদি আমাকে বাঁচাতেই চান তাহলে এভাবে দুর্বল করে দেবেন না।’ তারপর ধীরে ধীরে আমার মন শান্ত হয়।