পতনের মুখে হাজার হাজার শহর। ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হ্রাস পাবে জনসংখ্যা। আর তার দরুণই ২১০০ সালের মধ্যে ভূতের শহরে পরিণত হবে শহরগুলি। ভারত নয়, আমেরিকার এমন ভবিতব্য জেনে উদ্বিগ্ন গবেষকেরা। গবেষণা বলছে, প্রায় আমেরিকার প্রায় ৩০,০০০ শহরের ল্যান্ডস্কেপ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র উত্তর সূত্রধর তার দুই সহকর্মী লরিন স্পিয়ারিং এবং সিবিল ড্যারিবলের সঙ্গে এই গবেষণাটি করেছেন। আমেরিকার ৫০টি রাজ্য নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে।
গত গবেষণায় বলা হয়েছে, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ আমেরিকার ৩০ হাজার শহরের প্রায় অর্ধেকই খালি হয়ে যাবে। প্রত্যেকটি শহরের জনসংখ্যা ১২ থেকে ২৩ শতাংশ হ্রাস পাবে এবং যে শহরগুলির পরিবেশ সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে, সেই শহরগুলিতে জনসংখ্যা এত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে যে তাদের চারপাশে নতুন শহরও তৈরি করতে হবে।
- অর্থনীতিতেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
মানুষকে শহর ত্যাগ করা বন্ধ করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন ও নগর পরিকল্পনাবিদদের নতুন পরিকল্পনা করতে হবে। কারণ যে গতিতে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে, সেই অনুযায়ী অনেক ধরনের আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগও ঘটবে। এসব দুর্যোগ ফসল উৎপাদন ও অন্যান্য কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করবে। এর প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতেও।
সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে জনসংখ্যা হ্রাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক কঠিন বাস্তব। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) অনুসারে, অ-মেট্রোপলিটান কাউন্টিগুলি ২০১০ এবং ২০১৭ এর মধ্যে ৩.২ শতাংশ হারে জনসংখ্যা হ্রাসের সম্মুখীন হয়েছে। প্রায়শই তরুণরা গ্রামীণ এলাকা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। ব্যবসার কিংবা আয়ের জন্য জনসংখ্যার কাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে। এবং জনবসতিহীন এলাকায় পড়ে থাকছে বয়স্ক জনসংখ্যা। যা দরুণ পরবর্তীতে ওই গ্রামের জনসংখ্যার হার শূন্যের ঘরে চলে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে আমেরিকায় এমন অনেক শহর রয়েছে যেখানে ঋতু পরিবর্তনের কারণে জনসংখ্যা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা শুরু হয়ে গিয়েছে। এরইমধ্যে, আমেরিকার প্রায় ৪৩ শতাংশ শহরগুলি জনবসতি হারাচ্ছে। শতাব্দীর শেষের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সংখ্যা বেড়ে ৬৪ শতাংশ হবে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হবে আমেরিকার উত্তর-পূর্ব ও মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে। টেক্সাস এবং উটাহ উন্নয়নশীল অঞ্চলগুলোর অবস্থার অবনতি হবে ২১০০ সালের মধ্যে।