HT বাংলা থেকে সেরা খবর পড়ার জন্য ‘অনুমতি’ বিকল্প বেছে নিন
বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Kushti Akhara in Kolkata: কুস্তির প্যাঁচ বনাম মনের প্যাঁচ! টিকে থাকার লড়াইয়ে কলকাতার ইতিহাসের আখড়া

Kushti Akhara in Kolkata: কুস্তির প্যাঁচ বনাম মনের প্যাঁচ! টিকে থাকার লড়াইয়ে কলকাতার ইতিহাসের আখড়া

History of Kolkata: কলকাতার প্রাচীন কুস্তির আখড়া লড়াই করছে সময়ের বিরুদ্ধে। এক দিকে পোর্ট ট্রাস্ট, অন্য দিকে বিশ্বায়ন— ঐতিহাসিক আখড়া দাঁড়িয়ে আছে সংকটের সামনে। 

সিয়ারাম আখড়া ব্যায়াম সমিতির মল্লবীররা। 

শীত শেষ হয়ে গিয়েছে। বসন্তের পালাও প্রায় শেষ। ভরপুর গ্রীষ্ম জাগ্রত দ্বারে। উত্তুরে হাওয়াকে ক্রমে পিছনে ঠেলে কলকাতা শহরের বুকে বইতে শুরু করেছে দখিনা বাতাস। তাপমাত্রা বাড়ছে। তবু মাঝে মাঝে এক আধ পশলা বৃষ্টি হঠাৎই শীত ফিরিয়ে দিয়ে যায় শহর কলকাতার বুকে। ভেজা শীত। এমনই এক ভেজা মেঘলা সকালে গঙ্গার ধারে দেখা সুরজ তিওয়ারির সঙ্গে। বয়স এখনও তিরিশ পেরোয়নি। অথচ সুরজ এখনই অনেকের ‘গুরুজি’। সেই ‘অনেক’-এর তালিকায় আট থেকে আশির জনা পঞ্চাশেক পুরুষ। সকলেই কলকাতার এক ইতিহাসের ধারক এবং বাহক।

কলকাতার এই ইতিহাসের নাম সিয়ারাম আখড়া ব্যায়াম সমিতি। যার সামনে দিয়ে বয়ে চলেছে গঙ্গা। লাগোয়া ছোটেলাল ঘাট। নদীর দিকে মুখ করে থাকলে ডান দিকে মাথা উঁচু করে এপার ওপার দাঁড়িয়ে থাকা হাওড়া ব্রিজ। ১৯৬১ সাল থেকে এখানেই রয়েছে সিয়ারাম আখড়া। আখড়ার ‘গুরুজি’ সুরজ।

সুরজের বাবা জোয়ালা তিওয়ারিকে চিনতেন অনেকেই। রাজ্যের তো বটেই দেশের কুস্তির মহলেও তিনি ছিলেন পরিচিত নাম। আখড়ার সবাই তাঁকে গুরুজি বলেই ডাকতেন। চলতি বছরের প্রথম দিনেই অঘটন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইহলোক ত্যাগ করেছেন গম্ভীর, প্রতাপশালী কুস্তিগির। তার পর থেকেই দায়িত্ব বর্তেছে সুরজের কাঁধে। ‘গুরুজি’র দায়িত্ব। সেই কাঁধও কম চওড়া নয়। ইতিমধ্যেই জাতীয় স্তরের বেশ কিছু প্রতিযোগিতায় জুটেছে স্বর্ণপদক। রীতিমতো ওস্তাদ কুস্তিগিরের মতোই নানা বয়সের উৎসাহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেন তিনি। মেঘলা দিনের ভোরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

আখড়ার গুরুজি সুরজ তিওয়ারি

সিয়ারাম আখড়া নিয়ে লেখা প্রকাশ করার ইচ্ছার কথা শুনেই সুরজ একটু থমকে দাঁড়ান। বলেন, অপেক্ষা করতে। অমনি কোথা থেকে এক বছর কুড়ির ছোকরা এসে হাজির হন। বলেন, কোথা থেকে আসছেন? পরিচয়পত্র দেখতে চান। দেখিয়ে অনুমতি পাওয়া যায় ছবি তোলার। তত ক্ষণে কমলা-লাল কৌপীন বেঁধে তৈরি হয়ে গিয়েছেন বাকিরা। মেঘলা সকালে ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে শুরু হয়ে যায় কসরত।

আখড়ার বেশ কয়েকটি ভাগ। একটি অংশে খোলা মাঠ। তার পাশে জাল দিয়ে ঘেরা কিছু অংশ। বর্গাকার সেই অংশে মাটি ফেলা। অন্য পাশে বিশ্রাম কক্ষ। আর তার পাশে হনুমানের মন্দির। ‘জয় বজরংবলী’, ‘জয় শ্রীরাম’ বলে ছেলেপুলে থেকে মাঝবয়সিরা প্রথমে নেমে পড়েন মাঠে। চলে গা গরম করার প্রক্রিয়া। তার মাঝেই বয়োজ্যেষ্ঠ কেউ হাজির হলে দৌড়ে গিয়ে তাঁর দু’পায়ের হাঁটু আর পাতার মাঝামাঝি অংশ হাত ছুঁইয়ে নেওয়া। তার পরে মাটি ফেলা অংশে কুস্তির লড়াই। বেলা বাড়ে। সিয়ারাম আখড়া বেশ গমগমে হয়ে ওঠে।

সুরজ এত ক্ষণ হাওয়া হয়ে গিয়েছিলেন। হাজির হন দু’হাতে দুই মুগুর নিয়ে। বলেন, ‘আমরা ব্যায়াম করব, আপনারা ছবি তুলে নিন। আর কত দিন এই ছবি পাবেন, তা তো জানি না...’

অসমাপিকা ক্রিয়া দিয়ে শুরু হয় ছবি তোলা। সমাপিকা আসে সেই পর্বের শেষে। ‘আর কত দিন, মানে?’

সুরজ বলেন, ‘এই আখড়া আর কত দিন রাখতে পারব জানি না।’

কেন?

পোর্ট ট্রাস্টের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই আইনি বিবাদ চলে আসছে আখড়ার। জমি পোর্ট ট্রাস্টের। তারা উঠে যেতে বলেছে ৬২ বছরের পুরনো আখড়াকে। যত দিন জোয়ালা তিওয়ারি বেঁচে ছিলেন, তিনি আইনি পথে মোকাবিলার চেষ্টা করেছেন। তিনি গত হওয়ার পরে সেই লড়াই থেমেছে। এক সময় পর্যন্ত মাসে ৪০০ টাকার কিছু বেশি ভাড়া দেওয়ার নিয়ম ছিল। ভাড়া নাকি দেওয়াও হত। তার পরে পোর্ট ট্রাস্টের তরফে বলা হয়েছে মাসে ৭৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। তাতেই কপালে হাত আখড়ার। সেই টাকা দিতে না পারলে পোর্ট ট্রাস্ট দখল করবে জমি। বন্দর দখল করবে নদীর পাড়। তা ঠেকাতে আবার চাই আইনি লড়াই। আবার চাই অর্থ।

মল্লযুদ্ধের প্রশিক্ষণ

সুরজ তিওয়ারির কথায়, আখড়ায় যাঁরাই আসেন, তাঁদের কারও থেকে কোনও অর্থ নেওয়া হয় না। পুরনো যুগের সেবামূলক সমিতির মতো করেই চলে আসছে আখড়া। কোনও শিশুকে তাঁদের বাবা-মা এখানে কুস্তি শিখতে পাঠালেও, তাঁদের থেকে অর্থ চাওয়া হয় না। তাহলে সমিতি মাস গেলে ৭৬ হাজার পাবে কোথা থেকে?

অতএব প্রশ্নচিহ্ন! বিরাট প্রশ্নচিহ্ন। তাহলে কি বন্ধ হয়ে যাবে কলকাতার এই পুরনো সমিতিটি?

প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগেই মেঘলা সকালে হাজির হন একদল সাহেব-মেম। সঙ্গে লাখ-লাখ টাকার দামি ক্যামেরা। হাঙ্গেরি থেকে ভারতে এসেছেন তাঁরা ছবি তোলার ট্যুরে। আগে থেকেই বলে রাখা ছিল, এদিন ছবি তুলবেন তাঁরা। ফলে শুরু হয় সেই পর্ব।

কম-বেশি ঘণ্টাখানেক ধরে চলে ছবি তোলার পালা। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দাঁড় করানো হয় পালোয়ানদের। কারও কোমর পাঁচ ডিগ্রি বেঁকিয়ে, কারও হাত নয় ডিগ্রি তুলে, কাউকে হাফ বসিয়ে, কাউকে মৃদু শুইয়ে চলতে থাকে ছবি তোলা। বৃষ্টিহীন মেঘলা সকালে ভরা বর্ষার আওয়াজ তোলে শাটারের গতি।

গা গরমের পালা

শেষে দলের প্রধান অনুদান হিসাবে কিছু টাকা তুলে দেন আখড়ার হাতে। কত টাকা? সুরজের মুখ লাল হয়ে ওঠে। ‘প্রথমে বলল, তিন হাজার। এত ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কোমর ধরে গিয়েছে বলে, আর একটু চাইলাম। তাতে আর এক হাজার দিল। সব মিলিয়ে চার।’ চার হাজারের ধাক্কা সইতে তত ক্ষণে কোমর, হাত, পা বেঁকে গিয়েছে বহু পালোয়ানেরই। ‘গুরুজি বেঁচে থাকলে, অনেক আগে ভাগিয়ে দিতেন ওঁদের। টাকা দেন বলে, ওঁরা যেমন ইচ্ছা আবদার করতে থাকেন’, খানিক হতাশা বেরিয়ে আসে অনুর্ধ্ব তিরিশের গুরুজির মুখ দিয়ে। চার পাশের বয়স্ক মুখগুলি আরও হতাশা নিয়ে তাকায়।

বয়স্ক। বুড়ো-বুড়ো। ইতিহাসের কোটরে বসে থাকা সব চোখ। কমবয়সিরা এখন কমই আসে। ক্রিকেট খেললে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে। কুস্তিতে ভবিষ্যৎ কোথায়? তাই আখড়ায় সদস্যের সংখ্যা কমছে। কুস্তিগিররা কুস্তির প্যাঁচ বোঝেন, মনের মারপ্যাঁচ বোঝেন না, অর্থনীতি-আইনের মারপ্যাঁচ তো নয়ই। এরই মধ্যে কে একটা সাহেব-মেমদের তর্জমা করে দেয়, কোনও টাকা নয়, কোনও পুরস্কার নয়, সামান্য চাল-ডালও নয়— বস্তুগত কোনও কিছুর জন্যই নয়, কোনও কিছু না নিয়ে, না পেয়ে চলছে এই আখড়া। ক্যামেরা থেমেছিল তার আগেই। এ কথা শুনে থামেন সাহেব-মেমরাও। বোধহয় বোঝেন না, কীসের উদ্দেশ্যে এত কিছু। তার পরে পায়ে পায়ে রওনা দেন সেখান থেকে।

‘আপনারা আবার আসবেন কিন্তু। আপনারা তো ঘরের লোক।’ পিছন থেকে ঘাড়ে চাপড় মারে বিরাশি সিক্কার হাত। বছর ষাট-পঁয়ষট্টির পালোয়ান এগিয়ে আসেন। আখড়ার জন্মলগ্ন থেকেই বোধহয় আছেন। খুব ছোটবেলায় বাপের কোলে চেপে আসতেন আখড়ায়। বহু মেঘলা সকালের সাক্ষী। এখন মেঘলা সময়েরও। ইতিহাসের ভার বইছেন। তবে সেই ভারেও কুঁজো হননি। বাজারে দোকান আছে। ভোরবেলা দোকান খুললে দু’পয়সা অতিরিক্ত রোজগার হতে পারে। তবু রোজ এখানে আসেন। কসরত করেন না। আর কুস্তি লড়ারও আগ্রহ নেই। তবু আসেন। কৌপীন পরেন। অপেক্ষা করেন সকলে চলে যাওয়ার। তার পরে নিজেও রওনা হন দোকান খুলতে।

কেন আসেন রোজ? কী পান এখানে?

ষাটোর্ধ্ব পালোয়ান মৃদু হাসেন। কোনও কথা বলেন না। জাল দিয়ে ঘেরা মল্লযুদ্ধের অনুশীলন ময়দানে ঢোকেন। কাঁচা মাটিতে মুখ গুঁজে উপুর হয়ে শুয়ে পড়েন। ঘরের লোক হয়ে আমরাই বুঝি না ওঁর মনের কথা। সাহেব-মেমরা তো কোন ছাড়!

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)

টুকিটাকি খবর

Latest News

'বাংলায় অনেক বড় বদল হবে, সময়ের অপেক্ষা, এক নারীর হাত ধরে যা…'বললেন মোদী বাবা CPIM-র হোলটাইমার, ডাক্তার হয়ে কষ্টের দাম দিতে চায় মাধ্যমিকে দ্বিতীয় উদয়ন T20 WC 2024: কে হবে বুমরাহর পেস পার্টনার? হার্দিকের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন রোহিত কবে থেকে CAA-র আওতায় ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে? ভোটের মধ্যে জানিয়ে দিলেন শাহ! বাংলায় আরও বাড়তে পারে আলুর দাম, হাত ছোঁয়াতে পারবেন না, কেন জানেন? মাধ্যমিকে কেমন রেজাল্ট হয়েছিল ‘দুর্জয়’-এর? অর্কপ্রভ বলছেন, ‘খুব একটা আহামরি..’ ১৪ মে সূর্যর বৃষে গমন, চার রাশির ভাগ্য হবে উজ্জ্বল, বাড়বে আয়, পাবেন সন্মান নির্বাচনী ফায়দা তুলতে বানানো অভিযোগ, বিবৃতি দিয়ে জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তও করতে পারবে না পুলিশ মোহনবাগানে ক্লোজ ডোর অনুশীলন! ফাইনালের জন্য কী গোপনে নতুন কৌশল তৈরি করছেন হাবাস?

Latest IPL News

T20 WC 2024: কে হবে বুমরাহর পেস পার্টনার? হার্দিকের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন রোহিত দলে হার্দিকের কোনও বিকল্প হতে পারে না- পান্ডিয়াকে নিয়ে নিজের যুক্তি দিলেন আগরকর আমাদের কয়েকটা জিনিস এখনও ঠিক করতে হবে- জিতেও নিজেদের ভুল খুঁজছেন কেএল রাহুল IPL ও বিশ্বকাপ এক নয়, আর সেজন্য বিরাটকে দরকার! রোহিতের হাসির মধ্যেই বললেন আগরকর বড় সমস্যার সামনে CSK! টিমের একাধিক বোলারের পরের ম্যাচ খেলা অনিশ্চিত, চিন্তায় দল KKR-এর জন্য বড় ধাক্কা! দেশে ফিরলেন নাইটদের তারকা বিদেশি ক্রিকেটার LSG-র কাছে ম্যাচ হেরেও মন জিতলেন বুমরাহ! খুদে ভক্তের হাতে তুলে দিলেন বিশেষ উপহার কেরল থেকে উঠে এসে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন…কেন একথা বললেন সঞ্জু স্যামসন? আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতকে খেলতে হবে লাহোরে, ভেনু প্রকাশ পাক বোর্ডের বিশ্বকাপের দলে চার স্পিনার,আগেই হেরে বসে আছে ভারত…দাবি অস্ট্রেলিয়ান তারকার

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.