সম্পর্কগুলি বিশেষ, আপনাকে কেবল সেগুলি আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে। আপনি যদি এমন কোনও সম্পর্কের মধ্যে থাকেন যেখানে আপনার সঙ্গী আপনার থেকে বয়সে বড়, তাহলে সেই সম্পর্কের মধ্যে অনেক কিছুই সামনে চলে আসে। অনেক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে যদি আপনার সঙ্গী এবং আপনার বয়সের মধ্যে বড় পার্থক্য থাকে তবে উভয়েরই মিলতে সমস্যা হয়।
সম্পর্কে দু'জনের বয়সের পার্থক্য হলে সমস্যা হয়? অনেকের মনেই এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে। সাধারণত বলা হয়, প্রেমিকের থেকে প্রেমিকা কিছুটা ছোটো হলে সম্পর্ক আরও সুন্দর হয়। যুক্তি হিসাবে তাঁরা বলেন, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় একটু বেশি ম্যাচিওর্ড হয়। অন্যদিকে কারও কারও মতে, বয়স একটা সংখ্যা মাত্র। ভালোবাসা, মনের মিল থাকলে, বয়সের কোনও প্রভাবই পড়ে না।
কিন্তু মনের মিল হওয়ার জন্যও তো একটা ম্যাচিওরিটি লেভেল থাকা প্রয়োজন। দু'জনের মধ্যে খুব বেশি বয়সের ফারাক হলেও সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা, ম্যাচিওরিটির অভাবে বোঝাপড়ার সমস্যা হতে পারে। আবার অনেক সময়ে একই বয়সে মেয়েরা বেশি ম্যাচিওরিটির কারণে ছেলেদের সঙ্গে রিলেট করতে পারেন না।
বয়সের ফারাকের গাণিতিক ফর্মুলা :
মার্কিন মুলুকের রিলেশনসিপ বিশেষজ্ঞদের মতে, এক্ষেত্রে একটি ফর্মুলা ব্যবহার করা যেতে পারে। সেটি হল বয়ফ্রেন্ডের বয়স/২+৭= গার্লফ্রেন্ডের ন্যূনতম বয়স।
উদাহরণ হিসাবে, কোনও ব্যক্তির বয়স যদি ২৮ হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর প্রেমিকার ন্যূনতম বয়স হওয়া উচিত্ ২৮/২+৭= ২১ বছর। আবার ৪০ বছরের কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে সেটাই দাঁড়াচ্ছে ২৭।
অর্থাত্ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বয়সের ফারাক আরও বেশি হলেও সমস্যা হয় না, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। কারণ, ২২-২৩ বছর বয়স পর্যন্ত মূলত সকলের মানসিক গঠনের পরিবর্তন হয়। তার পাশাপাশি কেরিয়ার, কাজ নিয়েও ব্যস্ত থাকেন এই বয়সের মানুষরা। তাই এই সময়ে এক-একটি বছরেও মানুষের ম্যাচিওরিটি অনেকটাই বেড়ে যায়। কিন্তু একটা বয়সের পর সেই ম্যাচিওরিটির গ্রাফটি সমান্তরাল হয়ে যায়। তাই বেশি বয়সের ক্ষেত্রে দু'জনের মধ্যে বয়সের ফারাক অনেকটা হলেও ম্যাচিওরিটি লেভেলের ফারাক খুব একটা হয় না।
Quora-তে এই জাতীয় অনেক প্রশ্নই আছে। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ড অনেক বড় বা ছোট হলে সেক্ষেত্রে কী কী সুবিধা এবং কী কী সমস্যা হতে পারে। এমন সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিরাই জানিয়েছেন নিজেদের অভিজ্ঞতা :
মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বয়স কিছুটা বড় হওয়ার সুবিধা :
এখনও সিংহভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের আর্থিকভাবে বেশি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রেমের সময়ে ছেলেদের বয়স বেশি হলে, তাঁরা গার্লফ্রেন্ডের পড়াশোনা চলাকালীন তাঁরা নিজেদের কেরিয়ার অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। পরে বিষয়টা বিয়ে বা লিভ-ইনের দিকে এগোলে তখন সুবিধা হয়।
ছোট থেকেই মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় ৪-৫ বছর বেশি মানসিকভাবে ম্যাচিওর মনে করা হয়। ফলে একটি মেয়ের, তাঁর সমবয়সী বেশিরভাগ ছেলেদের 'বাচ্চা' মনে হতেই পারে। এর ব্যাতিক্রমও অবশ্য আছে।
অসুবিধা :
বোঝাপড়ার সমস্যা - বেশি বয়সের বয়ফ্রেন্ডরা তাঁদের গার্লফ্রেন্ডের বয়সটা অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছেন। তাঁরা এখন একটা ভিন্ন জগতে রয়েছে। তাঁদের সেই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে তাই অল্পবয়সি প্রেমিকাদের রিলেট করতে সমস্যা হতে পারে।
তবে, এগুলি পাশাপাশি এটাও জেনে রাখুন, এগুলি সবই সমাজের স্থির করে দেওয়া সংস্কার মাত্র। ২০ বছরের মতো বড় ফারাক, সমবয়স, বয়সে বড় প্রেমিকা- এমন বহু সম্পর্ক রয়েছে। তাঁদেরও লম্বা রিলেশনসিপ, বিয়ের অজস্র নজির রয়েছে। তাই শুধুমাত্র সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভাবলে চলবে না। শুনুন আপনাদের দু'জনের হৃদয়ের কথা। আপনারা চাইলে কোনও সমস্যাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।