ইচ্ছেতেই উপায়! আবারও এই কথা প্রমাণ হয়ে গেল। বছর ৯৫'য়ের এক ‘যুবক’-এর কাণ্ডে হতবাক গোটা নেটপাড়া। কি ঘটনা জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই? এই কাহিনি ডেভিড মার্জটের। সারের বাসিন্দা ডেভিড মার্জট। ৯৫ বছর বয়সে তিনি মাস্টার্স করলেন আর্টসে। কিংস্টোন বিশ্ববিদ্যালয়ে মডার্ণ ইউরোপিয়ান ফিলোসফির ওপরে স্নাতকোত্তর হন। নিজের জীবনে পড়াশোনা শেষ করার পর, এমনকি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার ৭২ বছর পর তিনি আবারও ছুটে যান সেই পড়াশোনার দিকেই। পড়াশোনার সত্যিই কোনও বয়স হয় না। এদিকে এই ঘটনা চাউর হতেই সমাজমাধ্যমে প্রশংসার ঝড় উঠেছে।
ডেভিড মার্জট, পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে তিনি কিংস্টোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মর্ডান ইউরোপিয়ান ফিলোসফি বা আধুনিক ইউরোপীয় দর্শনে এমএ বা স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। মার্জট তাঁর ডাক্তারি পাশ করার ৭২ বছর পর বর্তমানে এই ডিগ্রি প্রাপ্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে খবর, ডাঃ মার্জট এখন পার্ট টাইম ডক্টরেটের চিন্তা ভাবনা করছেন। যা সুসম্পন্ন হতে তার ১০২ বছর বয়স হবে।
মার্জটের কথায়, তাঁর এই ডিগ্রি তাঁর পরিশ্রমের প্রতীক। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার স্মৃতি আর আগের মত নেই।' পাশাপাশি যারা কোন এক সময় তাদের শিক্ষাকে মাঝপথে ছেড়ে দিয়েছেন, এবং এখন নতুন করে আবার পড়াশোনা শুরু করতে চান; এমন ব্যক্তিদের জন্য মার্জট বলেন, 'এটি একটি জুয়া খেলার মতো। আপনি বাজি ধরবেন, হয় জিতবেন নয় হারবেন। তবে মোদ্দা কথা হল এই যে, যদি আপনার ইচ্ছে থাকে, আত্মার থেকে করতে ইচ্ছে করে, তবে এগিয়ে যান। সাফল্য আসতে বাধ্য।'
এদিনের ডিগ্রি নিয়ে মার্জটকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমি ভাগ্যবান যে ওয়ার্ল্ড ক্লাস শিক্ষকরা আমাকে তাদের ছাত্র হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সেই সঙ্গে আমাকে সর্বদাই উৎসাহ প্রদান করেছেন।' তিনি আরও বলেন, 'আমি মনে করি, নিজেকে সবসময় একটা চ্যালেঞ্জ দেওয়া উচিত। সে আপনি যতই বুড়ো হয়ে যান না কেন!'
ডাঃ মার্জটের স্ত্রীবিয়োগ তাঁর বিবাহের ৬৫ বছর পর হয়। তিনি জানান, তাঁর এই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তাঁর মন মেজাজকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করেছে। এহেনও কৃতী ছাত্রের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কিংস্টোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক স্টেলা স্যান্ডফোর্ড বলেন, 'ডেভিড যখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, তাঁর কাছে আগাগোড়াই এক অভাবনীয় কেরিয়ার ছিল। সেই সঙ্গে ছিল জ্ঞান ও অকল্পনীয় অভিজ্ঞতার সম্পদ।' তিনি আরও বলেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা সবসময় চাই আমাদের শ্রেণিকক্ষে যেন বৈচিত্র্য বিরাজ করে। তাতে যে উপকারটি হয় তা হল, বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচনা। ইতি পড়ুয়ারা যেমন লাভবান হন, সেই সঙ্গে একজন শিক্ষক হিসেবে আমরাও সমৃদ্ধ হই। আর এই ধরনের আলোচনা শ্রেণীকক্ষকে বৈচিত্র্যময়তার পাশাপাশি আকর্ষণীয় করে তোলে। আমাদের এ কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়, এই বৈচিত্র্যময়তার তালিকায় প্রজন্মগত বৈচিত্র্য এক অন্যতম নিদর্শন।’