বলিউডের ‘আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ’ ছবির শ্যুট হয়েছিল ম্যাকলাস্কিগঞ্জে। রাঁচি থেকে ৭০ কিমি দূরে ছোট নাগপুর মালভূমিতে একটা ছোট্ট শহর। ১৯৩৩ সালে কলোনাইজেশন সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার পক্ষে কলকাতার ব্যবসায়ী ইটি ম্যাকলস্কি স্থানীয় রাজার কাছ থেকে ৯টি গ্রাম লিজে নেন ও অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের এখানে থাকার অহ্বান জানান। তখন ৩০০ পরিবার নিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই জায়গা। তারপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ধীরে ধীরে মানুষের সংখ্যা কমতে থাকে। বর্তমানে এখনে বসবাস করে মাত্র ২৩টি পরিবার।
বুদ্ধদেব গুহর অনেক গল্পে এই সাহেব গ্রামের গল্প আছে। লেখকের নিজের একটি বাড়িও রয়েছে এখানে। শুধু তাই নয়, একসময় বাঙালির হাওয়া বদলের আদর্শ জায়গা হিসেবে দেখা হত এটিকে। নির্জন ঢেউ খেলানো প্রান্তর, জঙ্গল, পাহাড়ি নদী, ধরনা মিলিয়ে একদম ছবির মতো সুন্দর এই জায়গা।
পায়ে পায়ে হেঁটে দেখতে ভালো লাগে এই গ্রাম। সাহেবদের পুরনো বাংলোগুলো এখন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। নিরিবিলি জঙ্গলের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যাবেন কোন অজানায়। পাশেই রয়েছে চট্টি নদী। এখানকার আবহাওয়া খুবই মনোরম। যা আকর্ষণ করেছিল সাহেবদের। এই অঞ্চল মূলত মুন্ডা, ওঁরাও প্রভৃতি আদিবাসীদের বাসভূমি।
গাড়ি ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ডেগাডেগি নদী ও কুমারপাত্রা নদী দেখতে। কুমারপাত্রা নদীর কাছে কলোরাডো ভূমিরূপ দেখতে ভুলবেন না। এছাড়াও রয়েছে হেসালাং ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সমগ্র ম্যাকলাস্কিগঞ্জের এরিয়াল ভিউ দেখতে পাওয়া যায়। দেখুন কান্তি ফলস। কাছেই দুল্লি গ্রামে আছে সর্ব-ধর্ম-স্থল। যেখানে একসঙ্গে রয়েছে মন্দির-মসজিদ-গুরুদ্বার-গির্জা।
ম্যাকলস্কিগঞ্জের নাট্টা পাহাড়ে ট্রেক করা যায়মায়াপুর জঙ্গল ভেদ করে পৌঁছতে হবে এই পাহাড়ের মাথায়। আর এখান থেকে সূর্যাস্তের শোভা অসাধারণ। দুটো দিন যদি কাটাতে চান প্রকৃতির কোলে, কোনও তামঝাম ছাড়া তাহলে দুর্দান্ত লাগবে।
কীভাবে যাবেন:
হাওড়া শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস সোজা ম্যাকলাস্কিগঞ্জে নামায়। তবে সেটা রাত ১২টার পরে। নির্জন হওয়ায় আপনাকে আগে থেকে হোটেলে কথা বলে রাখতে হবে। আর যদি রাতের ঝুটঝামেলায় জড়াতে না চান সোজা চলে আসুন রাঁচি। সেখান থেকে গাড়িতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথ।
কোথায় থাকবেন:
ম্যাকলাস্কিগঞ্জে থাকার জায়গা হাতে গোনা। থাকতে পারেন গোর্ডন গেস্ট হাউজ, রানাস কান্ট্রি কটেজ, ম্য়াকলাস্কিগঞ্জ গভরমেন্ট গেস্ট হাউজ, ড্রিম ডেস্টিনেশন।