মঙ্গল গ্রহ অভিযান সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, লাল গ্রহে মানুষের উপনিবেশ বা বসতি তৈরি করতে এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে প্রয়োজন মাত্র দু’ডজন নভোচারী। আগে অনুমান করা হয়েছিল অন্তত ১০০ জন প্রয়োজন মঙ্গল গ্রহে এই ধরনের মানুষের বসতি গড়ে তোলার জন্য। জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা আগের গবেষণাগুলি পর্যালোচনা করে বর্তমানে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। নতুন বিশ্লেষণে মানুষের সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক আচরণের পাশাপাশি মানুষের মধ্যেকার আদানপ্রদানের ধারাবাহিকতা বিবেচনা করা হয়েছে। এই গবেষণা থেকেই বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে মহাকাশে উপনিবেশ তৈরি এবং তার টিকিয়ে রাখার জন্য মাত্র ২২ জন লোকই যথেষ্ট।
মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি নির্মাণ করা একটি অবিশ্বাস্য এবং জটিল বিষয়। তার কারণ গ্রহটির প্রাকৃতিক পরিবেশ। মঙ্গল গ্রহে নির্মিত যেকোনও আবাসস্থলকে অনেকাংশই স্বাবলম্বী হতে হবে। ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনকারীরা উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পৃথিবী থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহের পাশাপাশি মঙ্গলে বসেও কিছু ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হবেন, আশাপ্রকাশ করছেন তারা। এর সঙ্গে সঙ্গেই মঙ্গলের পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে সেখানে বসবাসকারী নভোচারীদের মনস্তাত্ত্বিক এবং আচরণগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
অদূর ভবিষ্যতে মঙ্গলে যদি মানুষ বসবাস শুরু করে তাহলে তাদের আচরণগত এবং মনস্তাত্ত্বিক আদানপ্রদান কেমন হবে? তা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্যই গবেষণাটি করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন এবং উচ্চ চাপ যুক্ত পরিবেশে কাজ করা নভোচারী দলগুলির আগের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এজেন্ট বেসড মডেল নামে একটি কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করে গবেষকরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মঙ্গল গ্রহে মানুষের জীবন কাটানোর অনুকরণ করেছেন।
মেটাবলিজম, স্থিতিস্থাপকতা, দক্ষতা এবং চাপ এই চারটি মনস্তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে সিমুলেশনটি বিবেচনা করা হয়েছে। গবেষকরা দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, দীর্ঘ মেয়াদে একটি কার্যকরী উপনিবেশ বজায় রাখার জন্য ২২ জন নভোচর প্রয়োজন। বিজ্ঞানীরা আরও লক্ষ্য করেছেন এই কাজে উপযুক্ত ব্যক্তিদেরই মঙ্গলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারণ মঙ্গলের মত পরিবেশে বেঁচে থাকতে গেলে স্নায়বিক উত্তেজনার সাথে লড়াই করতে হয় প্রতি নিয়ত।