আজ সংসদে পেশ হল জাতীয় নির্বাচন কমিশনার সংক্রান্ত সংশোধনী বিল। নয়া এই বিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সমান বেতন দেওয়া হবে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং বাকি দুই নির্বাচনী কমিশনারকে। এদিকে নয়া বিলে নির্বাচনী কমিশনারদের 'সার্চ কমিটি' নিয়েও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কমিশনারদের খুঁজরে তিন সদস্যের সার্চ কমিটি থাকবে। কমিটির প্রধান হবেন আইনমন্ত্রী। তাছাড়াও কমিটিতে সচিব পদের দুই আমলা থাকবেন। এই কমিটি পাঁচজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে বেছে নেবে। যার থেকে শেষ পর্যন্ত কমিশনারকে বেছে নেওয়া হবে। এদিকে নয়া বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের কোনও বিচারপতিকে অপসারণ করতে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, এরপর থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণের ক্ষেত্রেও সেই প্রক্রিয়া অসুরণ করা হবে। অন্য দুই কমিশনারকে অপসারণ করা হতে পারে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারের সুপারিশে। (আরও পড়ুন: শীঘ্রই UPI-এর মাধ্যমে পাঠানো যাবে ডলার! SWIFT-এর সাথে আলোচনায় NPCI, RBI)
আরও পড়ুন: '৫০% ছাড়… সবচেয়ে সস্তায়…', রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে সংসদে বড় দাবি সরকারের
নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে গত মার্চ মাসেই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশে বলা হয়েছিল, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের দায়িত্বে থাকা কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতার সঙ্গে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তবে সেই কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতির নাম 'কাটতে' অগস্টেই বিল এনেছিল সরকার। সেই বিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত একজন মন্ত্রী। কমিটির বৈঠক ডাকবেন প্রধানমন্ত্রীই। সুপ্রিম কোর্টের মার্চের রায়কে নাকচ করতেই এই নয়া বিল আনা হয়েছিল। সেই বিলেই আরও কিছু সংশোধন করে তা আজ পেশ করা হয় সংসদে।
আরও পড়ুন: পূর্ব ভারত থেকে ১৯টি স্পেশাল ট্রেন চালুর ঘোষণা রেলের, জানুন রুট ও অন্যান্য বিশদ
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের উচ্চপদে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম জোসেফ, অজয় রাস্তোগী, অনিরুদ্ধ বোস, হৃষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সমন্বয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, অনেক রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় এসেছে। তবে তাদের কেউই নির্বাচন কমিশনের নিয়োগের জন্য আইন বা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া তৈরি করেনি। সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে এই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা 'অনিবার্য প্রয়োজনীয়তা' বলে উল্লেখ করা হয়। বেঞ্চ বলে, 'গণতন্ত্র জনগণের ক্ষমতার সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত... গণতন্ত্র সাধারণ মানুষের হাতে শান্তিপূর্ণ বিপ্লবকে সহজতর করে তুলবে। তবে তার জন্য নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে। কোনও দুর্বল নির্বাচন কমিশন তাদের আসল দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। ক্ষমতা দখলই অনেক সময়ে রাজনৈতিক দলগুলির মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু গণতন্ত্রে সরকারের কার্যক্রম ন্যায়পরায়ণ হওয়া উচিৎ।'