সাম্প্রতিককালে বেড়েছে সাইবার জালিয়াতি। গ্রাহকের অজ্ঞাতেই তাঁর অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে হয়ে থাকে এই সাইবার জালিয়াতি। কোনও ক্ষেত্রে লিঙ্ক পাঠিয়ে ফোন হ্যাক করা হয়, কখনও আবার টাকা দেওয়ার নামে কিউআর কোড পাঠানো হয়, আবার ফোন করে কেওয়াইসির নামে জালিয়াতি হয় তো আবার আধারের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেয় জালিয়াতরা। এই আবহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল গুজরাটের উপভোক্তা আদালত। সুরাটের সেই আদালতের তরফে বলা হল, যদি সময় মতো গ্রাহক সাইবার জালিয়াতির বিষয়ে ব্যাঙ্ককে জানিয়ে দেয়, তাহলে ব্যাঙ্ককে সেই গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। উপভোক্তা আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি ব্যাঙ্কের তরফে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হয়, তাহলে তা গাফিলতি হিসেবে গণ্য করা হবে। (আরও পড়ুন: অবশেষে জয় সরকারি কর্মীদের, নভেম্বরে কার্যকর হবে সপ্তম বেতন কমিশন, বললেন মন্ত্রী)
রিপোর্ট অনুযায়ী, নবসারি কনজিউমার ডিসপিউট রিড্রেসাল কমিশন একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এসবিআই-কে ৩৯,৫৭৮ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সাইবার জালিয়াতির শিকার এক গ্রাহককে এই টাকা দিতে বলা হয়েছে ব্যাঙ্ককে। জানা গিয়েছে, সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে সেই দিনই ব্যাঙ্কের স্থানীয় শাখায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক মহিলা। এই পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের পর্যবেক্ষণ, ব্যাঙ্ক চাইলে সেদিনই এই ঘটনায় পদক্ষেপ করতে পারত। কারণ ঘটনার দিনের জিন ব্যাঙ্ক জানতে পারত, সেই টাকা মহিলার অ্যাকাউন্ট থেকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত ভাবে তাই ব্যাঙ্কের পক্ষে পদক্ষেপ করা সম্ভব ছিল।
আরও পড়ুন: আসছে নয়া আইন, পুরনো পেনশন নিয়ে বড় ঘোষণা, সরকারি কর্মীদের মুখে ফুটবে হাসি?
জানা গিয়েছে, নবসারির বাসিন্দা বিধি সুহাগিয়ার একটি অ্যাকাউন্ট ছিল এসবিআই-তে। সাইবার জালিয়াতির জেরে অ্যাকাউন্টে থাকা ৫৯,০৭৮ টাকা হারান তিনি। ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর এই ঘটনাটি ঘটে। তাঁর অজ্ঞাতেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে যায়। টাকা কেটে যাওয়ার পরপরই তিনি স্থানীয় শাখায় গিয়ে অভিযোগ জানান। এদিকে সাইবার ক্রাইমের হেল্পলাইন নম্বরেও ফোন করেন তিনি। পুলিশ ১৯,৫০০ টাকা ফেরাতে সক্ষম হয়। সেই টাকা এসবিআই-এ বিধির অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে ফেডারেল ব্যাঙ্কের একটি অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল। পরে আদলতের নির্দেশে সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয় বিধিকে। এদিকে বাকি ৩৯,৫৭৮ টাকা আইসিআইসিআই-এর একটি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল। এই জালিয়াতি ইউপিআই-এর মাধ্যমে হয়েছিল এবং বিধি কারও সঙ্গে কোনও পাসওয়ার্ড বা ওটিপি শেয়ার করেননি। এদিকে ব্যাঙ্কের যুক্তি ছিল, নিজের দোষেই বিধি টাকা হারান। ব্যাঙ্ক অবশ্য ইউপিআই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নাকি যোগাযোগ করেছিল। তবে তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এই আবহে সেই টাকা ব্যাঙ্ককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে বিধিকে।