২০২৫ সালের মধ্যে ভারত থেকে টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা নির্মূল করা দূরস্থান, আগামী এক বছরে বিশ্বে টিবি (Tuberculosis) রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে প্রায় ১০ লাখ। এমনই আশঙ্কাজনক পূর্বাভাস করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) শীর্ষ স্থানীয় বিজ্ঞানী তথা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল সৌম্য স্বামীনাথন।
বিশ্বে প্রতি বছর এক কোটি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। তাঁদের মধ্যে গড়ে ১৪ লাখ মারা যান। পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক সংক্রামক রোগের তকমা বহু কাল থেকেই বয়ে বেড়াচ্ছে টিউবারকিউলোসিস।
স্বামীনাথন জানিয়েছেন, ‘টিবি কর্মসূচি নিরূপণে বড়সড় বাধা তৈরি করেছে কোভিড অতিমারী। টিবি নির্ধারণে ব্যবহৃত জেনএক্স যন্ত্র কোভিড-এর আরটি-পিসিআর (RT-PCR test) পরীক্ষার কাজে লাগানো হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও আপাতত করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত রয়েছেন। লকডাউন-সহ বিবিধ নিষেধাজ্ঞার কারণে আয়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যার ফলে বাড়ছে অপুষ্টির হার। এর জেরে প্রতি বছর আরও ১০ লাখ মানুষ টিবি আক্রান্ত হতে পারেন।’
ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সম্মেলনে তাঁর ভাষণে স্বামীনাথন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘অতিমারীর সময় টিবি নিয়ন্ত্রণে প্রচার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমেছে, যা ভবিষ্যতে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটাবে।’
২০১৯ সালে ভারতে মোট ২০,৬৯,০০০ টিবি রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের মোট টিবি রোগীর ২৬% ভারতের বাসিন্দা। ২০২৫ সালে এই সংখ্যায় আরও একলাখ রোগী যুক্ত হবে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। এই কারণে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে ভারত থেকে টিবি নির্মূল হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত বিশ বাঁও জলের নীচে তলিয়েছে।
তবে অতিমারীর জেরে বেশ কিছু শিক্ষালাভ হয়েছে এবং নতুন সমাধান খোঁজার চেষ্টায় বেসরকারি ক্ষেত্রকে যুক্ত করা গিয়েছে বলে মনে করছেন স্বামীনাথন। তাঁর মতে, ভবিষ্যতে এর সুফল ভোগ করবে ভারতের টিবি নির্মূল কর্মসূচি।