২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য বিলগ্নীকরণের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার কোটি টাকা স্থির করল কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল পেশ হওয়া বাজেট প্রস্তাব থেকে এমনটাই জানা গিয়ছে। উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগেই বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে কোষাগার ভরানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে গত পাঁচবছর ধরে নিজেদের লক্ষ্যে একবারও পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি কেন্দ্র। ২০২৩ সালেও সেই লক্ষ্য কয়েক কোটি হস্ত দূরেই থেকে যাবে বলে জানা যাচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে ৫১ হাজার কোটি টাকা কোষাগারে তোলার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্র। তবে সেই লক্ষ্য থেকে অনেকটাই দূরে থেকে যায় সরকার। এই আবহে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার কোটি স্থির করা হয়। (আরও পড়ুন: কয়েক লাখ কোটির বাজেটে বাংলার ঝুলিতে এল কত? জানুন হিসেব)
আরও পড়ুন: বিতর্কের মাঝে মলদ্বীপের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ল ৫০ শতাংশ! খরচের অঙ্ক জানেন কত?
এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে আশা করা হচ্ছিল, সরকারি মালিকানাধীন এনএমডিসি স্টিল এবং আইডিবিআই ব্যাঙ্ককে বেসরকারি খাতে তুলে দিয়ে এই অর্থবর্ষে ৫১ হাজার কোটি টাকা কোষাগারে ভরার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে মনে হচ্ছে আইডিবিআই ব্যাঙ্কের বিলগ্নীকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না এই অর্থবর্ষে। এদিকে বিভিন্ন নির্বাচনের জেরে এনএমডিসি স্টিলের বিলগ্নীকরণও থমকে। এছাড়াও এবছর সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের বিলগ্নীকরণেরও পরিকল্পনা করেছিল সরকার। তবে সেটাও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে আপাতত হেলিকপ্টার পরিষেবা প্রদানকারী পবন হংসের বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে সরকার। তবে ছোটখাটো সংস্থার বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে সরকার এবছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পকেটে ভরতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। যদিও নির্ধারিত লক্ষ্যের আর্ধেকেরও কম এই পরিমাণ। এদিকে শুধু এবছর নয়, বিগত পাঁচবছর ধরে টানা এই বিলগ্নীকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে মোদী সরকার। তবে বিশেষ করে এবছরে বিলগ্নীকরণ বা বেসরকারিকরণ ধীর গতিতে চলছে রাজনৈতিক কারণে।
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে বেসরকারিকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ হাজার কোটি, আর সরকারের পকেটে ঢোকে ৫০ হাজার কোটি। এরপর ২০২০ সালে লক্ষ্য ছিল ২ লাখ ১০ হাজার কোটি, আর পূরণ হয় প্রায় ৩৩ হাজার কোটি। ২০২১ সালে লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি, আর সরকারের পকেটে ঢোকে ১৫ হাজার কোটি। ২০২২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫ হাজার কোটি, পকেটে ঢোকে ৩১ হাজার কোটি। আর চলচি অর্থবর্ষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ হাজার কোটি, এখনও পর্যন্ত পকেটে ঢুকেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি। এদিকে বিশেষজ্ঞদের মত, সার্বিক ভাবে অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা যতক্ষণ পূরণ হচ্ছে, ততক্ষণ বিলগ্নীকরণের লক্ষ্যমাত্রায় ঘাটতির বিষয়টি সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। এই অর্থবর্ষে সরকারের লক্ষ্য, ডিজিপির ৫.৯ শতাংশের মধ্যে আর্থিক ঘাটতিকে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সরকারের তরফে মনে করা হচ্ছে, বিলগ্নীকরণের লক্ষ্যমাত্রার আর্ধেকের বেশি ঘাটতি থাকলেও সার্বিক ভাবে আর্থিক ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রায় তা প্রভাব ফেলবে না।