ট্র্যাভিস হেড ছন্দে থাকা মানে, বিপক্ষের বোলাররা কেঁদেও কুল পায় না। সেটা বুধবার লখনউ সুপার জায়ান্টসের বোলাররা আরও একবার টের পেলেন। পাওয়ার-প্লেতেই কার্যত লখনউয়ের কফিনে পেরেক পুঁতে দেন তিনি। ১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি হাঁকান হেড। সঙ্গে দোসর হন অভিষেক শর্মা। ১৯ বলে তিনিও নিজের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। সেই সঙ্গে লখনউয়ের দেওয়া ১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে ৬২ বল বাকি থাকতেই ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
লখনউকে চাপে ফেলে এদিন প্লে-অফের জায়গা কার্যত পাকা করে ফেলল প্যাট কামিন্সের দল। তারা উঠে এল পয়েন্ট টেবলের তিনে। এদিকে কেএল রাহুলরা ম্যাচ হারায়, তাঁদের শেষ চারের অঙ্ক জটিল হয়ে গেল। সেই সঙ্গে কপাল পুড়ল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। ২০২৪ আইপিএলের প্রথম টিম হিসেবে প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে গেল হার্দিক পান্ডিয়ার দল। যদিও এখনও তাদের দু'ম্যাচ বাকি। কিন্তু কোনও অঙ্কের হিসেবেই মুম্বই কোন পরিস্থিতি শেষ চারে আর যেতে পারবে না।
আরও পড়ুন: কোহলির এটা বলা উচিত হয়নি- বিরাট-গাভাসকর তরজায় নাক গলালেন ওয়াসিম আক্রম
এদিন যে পিচে লখনউ রান করতে গিয়ে রীতিমতো নাকানিচোবনি খেয়েছে, সেই একই পিচে হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ট্র্যাভিস হেড এবং অভিষেক শর্মা মিলে সুনামী বইয়ে দিলেন। শুধু চার-ছয়ের ফুলঝুরি। দুই তারকা মিলে এদিন মোট ১৬টি চার মেরেছেন। ছক্কা হাঁকিয়েছেন ১৪টি। যার নিটফল, দশ ওভারের মধ্যে খেলা শেষ। আর এতেই হয়ে গেল ইতিহাস। আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম টিম হিসেবে ১০ ওভারের মধ্যে ১৬০-এর উপর রান তাড়া করে জয় পেল হায়দরাবাদ। এছাড়াও এটি আইপিএলে দ্রুততম রান তাড়া করে জয়ের নজিরও।
এদিন লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এতে কার্যকরী কিছু করে উঠতে পারেননি লখনউয়ের ব্যাটাররা। বড় শটই খেলতে পারছিলেন না তাঁরা। পাওয়ার প্লে-তেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল লখনউ। কুইন্টন ডি'কক (৫ বলে ২) এবং মার্কাস স্টোইনিস (৫ বলে ৩) দ্রুত সাজঘরে ফিরলে, লোকেশ রাহুল এবং ক্রুণাল পান্ডিয়া দলের হাল ধরবেন, এমনটা মনে করা হয়েছিল। কিন্তু একসঙ্গে ৫ ওভার ক্রিজে কাটালেও, দু'জনের কেউই বড় শট খেলতে পারেননি। রাহুল ৩৩ বলে ঠুকেঠুকে ২৯ রান করেন। মারেন একটি করে চার এবং ছয়। এদিন রাহুলের খেলা দেখার পর, কেউ আর প্রশ্ন তুলবেন না, কেন ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা হয়নি লখনউ অধিয়ানকের! ক্রুণাল আবার ২টি ছয়ের হাত ধরে ২১ বলে ২৪ রান করেন।
আরও পড়ুন: রোহিত IPL 2025-এ কোনও ভাবেই MI-এর হয়ে খেলবেন না, বড় দাবি করলেন পাক কিংবদন্তি আক্রম
১১.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লখনউ মাত্র ৬৬ করে যখন ধুঁকছিল, তখন হাল ধরেন নিকোলাস পুরান এবং আয়ুশ বাদোনি মিলে। সেখান থেকে লখনউকে লড়াই করার মতো জায়গায় নিয়ে যান। তাঁরা ৯৯ রানের জুটি গড়েন। বাদোনি ২৮ বলে অর্ধশতরান করেন। শেষ পর্যন্ত ২০ বলে ৫৫ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৯টি চারে। পুরান ৬টি চার এবং একটি ছক্কার হাত ধরে ২৬ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁরা শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে লখনউকে ৪ উইকেটে ১৬৫ রানে নিয়ে যান। হায়দরাবাদের হয়ে ভুবনেশ্বর কুমার ২ উইকেট নিয়েছেন। ১ উইকেট নিয়েছে প্যাট কামিন্স।
তবে রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন ট্র্যাভিস হেড এবং অভিষেক শর্মা। দুই ওপেনারের তাণ্ডবে পাওয়ার প্লে-তেই বিনা উইকেটে ১০৭ রানে পৌঁছে গিয়েছিল হায়দরাবাদ। এর পর ৯.৪ ওভারে বিনা উইকেটে ১৬৭ করে ফেলেন হেডরা। ৩০ বলে ৮৯ করে অপরাজিত থাকেন ট্র্যাভিস হেড। হাঁকান ৮টি করে চার এবং ছক্কা। এদিকে ৮টি চার এবং ৬টি ছয়ের হাত ধরে ২৮ বলে অপরাজিত ৭৫ করেন অভিষেক শর্মা।