জ্ঞানবাপী মসজিদে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’ রিপোর্ট আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) বারাণসী জেলা আদালতে জমা দিয়েছে। আর সেটাকে ‘চূড়ান্ত’ বলে মানতে নারাজ মুসলিম পক্ষ। ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘এএসআইয়ের নথি কখনও আদালতের রায়ের মতো চূড়ান্ত নয়।’ তবে আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট বলছে, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতর হিন্দু দেবদেবীদের মতো চেহারার মূর্তি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তখন থেকেই নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ এই রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে মসজিদ কমিটি।
এদিকে জ্ঞানবাপীর প্যানেল বলছে, এএসআইয়ের সার্ভে রিপোর্ট তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। কমিটির সম্পাদক মহম্মদ ইয়াসিন এই বিষযে বলেন, ‘এটা একটা রিপোর্ট মাত্র। কোনও চূড়ান্ত রায় বা ফয়সালা নয়। এখানে একাধিক রিপোর্ট রয়েছে। এই ইস্যুতে এটা চূড়ান্ত বাক্য নয়।’ জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে এএসআই–কে সমীক্ষার অনুমতি দেওয়া ১৯৯১ সালের ‘ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা আইন (বিশেষ ব্যবস্থা)’ লঙ্ঘন কি না, তা নিয়ে তাঁদের আবেদন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। সেই মামলার শুনানিতে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে তাঁদের বক্তব্য সর্বোচ্চ আদালতকে জানানো হবে বলে জানান মহম্মদ ইয়াসিন।
অন্যদিকে হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন জানান, এএসআই মসজিদের ভিতর মন্দিরের নিদর্শন পেয়েছে। মন্দির ধ্বংস করেই ঔরঙ্গজেবের সময় মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। এখান থেকেই হিন্দু দেব–দেবীর মূর্তি মিলেছে। মন্দিরের অতীতের অংশ ব্যবহার করেই মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘এএসআই বলেছে এখানে বিশাল আকারের হিন্দু মন্দির ছিল। এই কাঠামোর অস্তিত্বের আগে। এটাই এএসআই খুঁজে পেয়েছে।’ যদিও এএসআইয়ের এই রিপোর্টকেই চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে রাজি নয় মুসলিম পক্ষ। যদিও বিষ্ণুশঙ্কর বলেছেন, এই সব বিষয়গুলিই প্রমাণ করে যে ১৭ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলেই মন্দির ভেঙে মসজিদ করা হয়েছিল। এখানে পার্সি ভাষার উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতা বিমানবন্দরে এবার ‘পুলিশ দিদি’, সমস্যার সমাধান থেকে বেচাল সবেতেই সক্রিয়
এছাড়া এই নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে গোটা দেশে তখন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেছেন, মুসলিম পক্ষের উচিত ওই মসজিদ হিন্দুদের হাতে তুলে দেওয়া। মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল বলেছেন, গোটা বিশ্ব এএসআইয়ের খুঁজে পাওয়া তথ্যকে মেনে নেবে। তাঁর কথায়, ‘এএসআই একটি প্রখ্যাত সংস্থা গোটা বিশ্বে। তাই এএসআই যে তথ্য খুঁজে পেয়েছে ভারত এবং বিশ্ব মেনে নেবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নতুন রিপোর্ট বেরিয়ে আসবে। যাতে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’ তবে এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘একজন মহান পণ্ডিত বলেছেন, এএসআই হাতে তৈরি হিন্দুত্ব। পেশাদার প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ইতিহাসবিদ আগে অ্যাকাডেমিক স্ক্রুটিনি করেনি। অনুমানের ভিত্তিতে এই গবেষণা আসলে উপহাস।’