বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ এবং 'মিঞা' (বাঙালি মুসলিম) সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলি কখনও লোকসভা নির্বাচনের ইস্যু হতে পারে না। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক এই সব বিষয় নিয়ে নিজের মন্তব্যের কারণ জানালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, তিনি এই সমস্যাগুলি উত্থাপন করছেন কারণ তিনি সংখ্যালঘুদের সামাজিক রূপান্তর চান, তাদের ভোট নয়।
যোরহাটের তিতাবোরে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে, তিনি আরও বলেন যে ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে তিনটিতে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সঙ্গে ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ হবে। রাজ্যের বাকি ১১টি আসনে হেলায় জিতবে গেরুয়া দল।
আরও পড়ুন। প্রার্থীদের সব অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য জানাতে হবে না, ভোটারদের সেই অধিকার নেই- SC
উন্নয়নই প্রধান, দাবি হিমন্ত
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবসময় বলি, ভোট পাওয়া একটি ভিন্ন জিনিস। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য প্রকৃত উন্নয়ন দেখতে চাই। এখন, তারা আমাকে ভোট দেয় বা আমি তাদের কাছে ভোট চাই কিনা - এটি অমূলক বিষয়’। প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন জন্য 'মিঞা’ ভোট না চাওয়ার তার আগের অবস্থানের পুনর্বিবেচনা করেছেন।
‘'মিঞা’' মূলত অসমের বাংলাভাষী মুসলমানদের জন্য ব্যবহৃত একটি নিন্দনীয় শব্দ এবং অ-বাংলাভাষী লোকেরা সাধারণত তাদেরকে বাংলাদেশী অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে।
আরও পড়ুন। বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মুসলিমদের উপর শর্ত চাপালেন হিমন্ত, স্বদেশি তকমা পেতে কী করতে হবে?
হিমন্ত বলেন, ‘বস্তুগত ভাবে একটি সম্প্রদায়ের উন্নতি করা উচিত। যদি সেই সম্প্রদায়ে বহুবিবাহ প্রচলিত থাকে, তাহলে তারা কীভাবে উন্নতি করবে? যদি বাল্যবিবাহ অব্যাহত থাকে, তাহলে তারা কীভাবে উন্নতি করবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘একইভাবে, কন্যা শিশুদের শিক্ষায় প্রবর্তন না করা হলে বা সম্পত্তির সমান অধিকার না দিলে 'মিঞা' সম্প্রদায় সমাজের অন্যান্য অংশের তুলনায় অগ্রসর হবে না।’
দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক
তাঁর কথায়, ‘সুতরাং, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি একটি ইতিবাচক প্ল্যাটফর্মে রয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ করুন, শিক্ষার্থীদের সাধারণ শিক্ষায় আনুন, বহুবিবাহ বন্ধ করুন, বাল্যবিবাহ বন্ধ করুন, মেয়ে বা মহিলাদের সম্পত্তির সমান অধিকার দিন।ট
মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি আসামের সংখ্যালঘু এলাকায় যাচ্ছি এবং ভোট নিয়ে আলোচনা করছি না। কিন্তু আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছি। এই নির্বাচনে আপনি আমাকে বিভিন্ন সংখ্যালঘু এলাকা ঘুরে দেখতে পাবেন এবং আমি শুধু এই বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলব’।
নির্বাচনী রাজনীতিকে ব্যবহার করে রূপান্তর
বহুবিবাহ বা বাল্যবিবাহের মতো বিষয় নির্বাচনী ইস্যু কিনা তা জানতে চাইলে তিনি স্পষ্টতই না জানিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ‘এগুলো আমার কাছে নির্বাচনী বিষয় নয়। এইসব বিষয় যার মাধ্যমে আমরা অসমে সামাজিক রূপান্তর আনতে পারি। নির্বাচন নির্বাচন, কিন্তু আমার লক্ষ্য নির্বাচনের চেয়ে বড়। তাই সেই লক্ষ্য অর্জনে নির্বাচনী রাজনীতি ব্যবহার করছি।’
আরও পড়ুন। বাংলাভাষি হিন্দুদের জন্য় সুখবর! ৬ মাসের মধ্যে ‘ডি ভোটার’ সমস্যার সমাধান হবে: হিমন্ত