গর্ভবতীদের জন্যে কতটা নিরাবদ করোনা টিকা? এই প্রশ্ন মানুষের মনে রয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের বহু জায়গাতেই সদ্য মা হয়েছেন বা গর্ভবতী, এমন মহিলাদের টিকা কেন্দ্র থেকে টিকা না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে মানুষের মনে জল্পনা আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গর্ভবতী মহিলাদের টিকাকরণ নিয়ে নয়া গাইডলাইন প্রকাশ করল কেন্দ্র।
এদিন কেন্দ্রের তরফে জানানো হয় যে যদি কোনও মহিলা গর্ভবতী অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে প্রসবের পর টিকাকরণ করাতে হবে। এদিকে সরকার দাবি করে গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ। তাতে সেই মহিলার গর্ভে থাকা সন্তানের ক্ষতি হওয়ার কোনও প্রমাণ মেলেনি। গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব বিরল (১০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে ১ জন)।
এদিকে সরকার জানায়, গর্ভবতী মহিলা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে শারীরিক সমস্যা বাড়লে অবিলম্বে সেই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্র জানাচ্ছে, যে গর্ভবতী মহিলার উচ্চরক্তচাপ, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস রয়েছে বা যদি কোনও গর্ভবতীর বয়স ৩৫ বছরের বেশি হয়, সেক্ষেত্রে কোভিড সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।
কয়েকদিন আগেই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রথম ঢেউয়ের থেকে দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে গর্ভবতী এবং প্রসূতি মহিলারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আইসিএমআর ১ হাজার ৫৩০ জন গর্ভবতী এবং প্রসূতি মহিলার উপর একটি সমীক্ষা চালায়। তার মধ্যে ১ হাজার ১৪৩ জনকে নেওয়া হয় গত বছর এবং দ্বিতীয় ওয়েভ আসার পর নেওয়া হয় ৩৮৩ জনকে। সমীক্ষা দলের এক প্রতিনিধি জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর গর্ভবতী এবং প্রসূতিদের মধ্যে সংক্রমণের হার ২৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মৃত্যুহারও দ্বিতীয় ওয়েভে বেড়েছে। গত বছর মৃত্যুহার ছিল ০.৭ শতাংশ। এবছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৭ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত সিংহভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে কোভিড নিউমোনিয়া এবং শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়ে তাঁদের মৃত্যু ঘটেছে।