নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক রেখে স্ত্রীর বিপুল চিকিৎসার খরচ মেটালেন চিকিৎসক স্বামী। শুধু এমবিবিএস ডিগ্রী বন্ধকই নয়, স্ত্রীকে বাঁচাতে জমি, জায়গা সমস্ত কিছুই বিক্রি করে ফেললেন। ঘটনাটি রাজস্থানের। ওই চিকিৎসকের নাম সুরেশ চৌধুরী। স্ত্রী অনিতা চৌধুরি এবং ৫ বছরের সন্তানকে নিয়েই তাঁর সংসার। তাই ভালোবাসার মানুষকে বাঁচাতে কোনওভাবেই পিছপা হননি ওই চিকিৎসক। নিজের সর্বস্ব দিয়ে অবশেষে স্ত্রীকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন সুরেশ চৌধুরী। পরিবারের সদস্যকে বাঁচাতে তিনি যা করে দেখিয়েছেন তা অন্যান্যদের উৎসাহিত করবে বলেই মনে করছেন অনেকেই।
ঘটনাটি কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সময় ঘটেছিল। রাজস্থানের পালি জেলার খেরওয়া এলাকায় ছোট সংসার ওই চিকিৎসকের। দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সময় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তার স্ত্রী অনিতা। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হওয়ায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করেন সুরেশ। কিন্তু, বেড না পাওয়ায় তাকে যোধপুরের এমস হাসপাতালে ভর্তি করেন। তারপরেও স্ত্রীকে সুস্থ করা সম্ভব হয়নি। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানতে পারেন তার ফুসফুস প্রায় ৯৫ শতাংশ বিকল হয়ে গিয়েছে। ফলে তাকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব বলেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সুরেশ নিজেও চিকিৎসক। তিনি কিছুতেই হাল ছাড়তে চাননি।
স্ত্রীকে সারিয়ে তোলার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর স্ত্রীকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। তার শরীরের ওজন তখন কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। ফুসফুসের পাশাপাশি হৃদযন্ত্রও প্রায় বিকল হয়ে যায়। এর ফলে ইকমো যন্ত্রের সাহায্যে তাকে কোনওভাবে তাকে বাঁচিয়ে রাখেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, এর জন্য প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি খরচ গুনতে হয় সুরেশকে। কোনওভাবে নিজের জমানো টাকা থেকে দশ লক্ষ টাকা দিতে পেরেছিলেন হাসপাতালকে। কিন্তু, এত টাকা কোথায় পাবেন তা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি। শেষে নিজের ডিগ্রি বন্ধক দিয়ে ৭০ লক্ষ টাকা পান। পাশাপাশি, জমি জায়গা বিক্রি করে এবং অন্যান্যদের কাছে ধার দেনা করেও তিনি বেশ কয়েক লক্ষ টাকা জোগাড় করেন। অবশেষে স্ত্রীকে সুস্থ করে তিনি ঘরে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন।