পঞ্জাবে নরেন্দ্র মোদীর কনভয়ের নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস শাসিত সেই রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর কনভয়কে এক প্রতিবাদ জমায়েতের জেরে ফ্লাইওভারে ১৫ থেকে ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যা নিয়ে কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাবের চান্নি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়া করেছে বিজেপির নেতৃত্ব। এদিকে পঞ্জাবের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি কর্মীদের। তেমনই এক অবস্থান বিক্ষোভ হচ্ছিল ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে। অভিযোগ এই বিক্ষোভস্থল থেকেই এক বচসার শুরু হয়। যা হিংসার রূপ নেয়। এক ভাইরাল ভিডিয়োতে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) উঠে আসে এই সভাস্থলে এক মারধরের ছবি। যার জেরে বিক্ষোভরত বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, যে ভাইরাল ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে এক মুসলিম ব্যক্তিকে মারধর করছেন বিজেপি কর্মীরা। শুধু তাই নয়, ওই মুসলিম ব্যক্তিকে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি উচ্চারণ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। উল্লেখ্য, যে ভিডিয়ো ক্লিপ এই মুহূর্তে ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে এই ব্যক্তিকে ওঠবস করানো হচ্ছে। রাস্তায় থুতু ফেলিয়ে তা চাটতে বাধ্য করানো হচ্ছে। এমনকি ভিডিয়োতে ওই ব্যক্তিকে বারবার বলতে শোনা যাচ্ছে যে তিনি মুসলিম। সূত্রের খবর, বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের নিয়ে ওই ব্যক্তি প্রথমে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তারপর বিজেপি কর্মীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। এমন ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই ঘটনার স্বতপ্রণোদিতভাবে পদক্ষেপ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। তিনি ধানবাদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে এই মর্মে নির্দেশ দেন। নির্দেশে তদন্তের পাশাপাশি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। একটি টুইটে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জানান, 'যে রাজ্যে মানুষ শান্তিতে থাকতে ভালোবাসেন, সেখানে শত্রুতার কোনও জায়গা নেই।'
জানা গিয়েছে, যে ব্যক্তি এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর নাম জিশান খান। তিনি ধানবাদের ওয়াসেপুরের সমশের নগরের বাসিন্দা। জিশান খানের ভাই হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন যে, জিশান বহুদিন ধরেই মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। রাঁচিতে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ সাইকাট্রিতে তাঁর চিকিৎসা চলছে। জিশানের ভাই রেহান জানিয়েছেন, 'ঘটমার পর তিনি (জিশান) বাড়ি ফিরেছেন। তবে আমরা কোনও ফরমাল অভিযোগ দায়ের করব কি না, তা ভাবছি। যারা এটা করেছে, তাদের এটা করা উচিত হয়নি। যদি উনি (জিশান) কোনও আপত্তিকর মন্তব্যও করে থাকেন, তাহলে ওদের মারধর করা, ধর্মীয় স্লোগান দেওয়া বা রাস্তা চাটতে বাধ্য করা উচিত হয়নি। ওঁকে (জিশান) পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারত।'
এদিকে, গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছে বিজেপি। ধানবাদে বিজেপির দাপুটে নেতা রাজ সিনহা প্রতিবাদ স্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলছেন, গোটা ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। 'এই ব্যক্তি আমাদের সামনে এসে আমাদের রাজ্য নেতাদের নামে আপত্তিকর কথা বলছিলেন। আমরা তাঁকে চলে যেতে বলি। আমি জানিনা এরপর কী হয়েছে, যখন আমাদের পার্টি কর্মীরা তাঁকে ধরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। যদিও গোটা ঘটনা তদন্ত হওয়া উচিত, দেখা উচিত এটা ষড়যন্ত্র কী না, নয়তো কেন একজন আচমকা আসবেন, আর আমাদের নেতাদের উদ্দেশে অপত্তিকর কথা বলবেন।' বিজেপির অভিযোগ, হেমন্ত সরকার রাজ্যে বেড়ে চলা অপরাধের ঘটনা নিয়ে স্বতপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেয় না, এক্ষেত্রে তা নেওয়ার নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে দাবি বিজেপির।