কার্যত থমকে গেছে লাদাখ নিয়ে ভারত-চিন আলোচনা। এর কারণ হল চিন যে সব জায়গায় বসে গেছে সেখান থেকে উঠতে চাইছে না, অন্যদিকে ভারতীয় সেনা বলছে চিনকে সীমান্তে এপ্রিলের আগের পরিস্থিতি আনতেই হবে। অন্যদিকে বেজিংয়ে চিনের বরিষ্ঠ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করছেন ভারতের রাষ্ট্রদূত। তাতে অবশ্য লাদাখে অচলাবস্থা কাটবে, তেমনটা জানা যায় নি।
মূলত প্যাংগং সো ও গোগরা থেকে যেতে চাইছে না লাল ফৌজ। এখানেই আটকে গেছে আলোচনা। পাঁচ রাউন্ড কোর কম্যান্ডারদের বৈঠকের পর তাই জটিলতা কাটছে না। সূত্রের খবর দোসরা অগস্টের বৈঠকে চিনকে বলা হয়েছে, যতক্ষণ ভারতীয় জমিতে তারা থাকবে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। আরেক বরিষ্ঠ অফিসার জানান যে শেষ পর্যন্ত চিনকে কিছু একটা মুখরক্ষা করতে পদক্ষেপ নিতেই হবে এই পরিস্থিতি সহজ করার জন্য।
আপাতত লাদাখে দুই পক্ষই প্রায় ১ লক্ষ সেনা রেখেছে। এই অচলাবস্থা যে অনেক দিন ধরে চলতে পারে, শীত অবধি গড়াতে পারে, সেটি আঁচ করে সেভাবেই তৈরী হচ্ছে ভারতীয় সেনা।
প্রসঙ্গত আগে প্যাংগং লেকে ফিঙ্গার আট অবধি প্যাট্রল করত ভারতীয় সেনা। এখন চিন সেনা ফিঙ্গার ফোরে বসে। ফলে ফিঙ্গার ৪-৮ অবধি আট কিলোমিটার রাস্তা এখন ভারতের নিয়ন্ত্রণে নেই। এখান থেকে চিন ফৌজকে সরাতে ভারত বদ্ধপরিকর। একই সঙ্গে দেপসাঙ্গে বিশাল সংখ্যক চিনা বাহিনীর উপস্থিতির ফলে যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে সেনার। গোগরা-হট স্প্রিংয়ে কুগরাং নদী অবধি পৌঁছাবার জন্য চিন অনেক কসরত করছে।
এই পরিস্থিতিতে চিনের দাবি না মানলেও সাবধানে পা রাখতে চাইছে ভারত। চিনের উস্কানিতে পা দিয়ে সীমান্তে পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয়ে যায়, সেই দিকে খেয়াল রাখছে ভারত।
অন্যদিকে চিনে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিশ্রি বেশ কয়েকজন বরিষ্ঠ নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের কর্তাস্থানীয় মেজর জেনারেল সি গুওয়েইকে ভারতের অবস্থানটি বুঝিয়ে বলেন। এর দুই দিন আগে কমুনিস্ট পার্টির বিদেশ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর লিউ জিয়ানচাওয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তবে এই বৈঠকে বিস্তারিত কী কথা হয়েছে, তা জানা যায় নি।
শুক্রবার ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন যে চিন যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয় সীমান্তে সেনা সরাবার। বিশেষ প্রতিনিধিরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে সীমান্তে সম্পূর্ণ সেনা সরিয়ে নেবে দুই পক্ষ, সেই কথা মাথায় রেখে চিনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেন অনুরাগ শ্রীবাস্তব। ঠিক একই কথা বলছে চিনও। ফলে তিমিরেই সীমান্তে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়া।