হনুমান চালিশা পাঠ করে আমেরিকার দুটি প্রথমসারির বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন এক পড়ুয়া। এমনই দাবি করলেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রমণিয়ম। তিনি দাবি করেছেন, ওই পড়ুয়ার যে আমেরিকার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেতে পারেন, তা মাসকয়েক আগেও দুঃসাধ্য বলে মনে হচ্ছিল। সেই পরিস্থিতিতে ওই পড়ুয়া এবং তাঁর বাবাকে নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ করার পরামর্শ দেন। তারপরই আমেরিকার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েই সুযোগ পেয়েছেন ওই পড়ুয়া। যদিও সেই মন্তব্যের জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের মুখে পড়েন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তাতে অবশ্য নিজের অবস্থান থেকে সরেননি। বরং তিনি দাবি করেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে তাঁর দিকে ট্রোলের বন্যা ধেয়ে আসবে, তা জেনেই ওই পোস্ট করেছিলেন। যে মানুষ বিষয়টা যেভাবে ভাবতে চান, তিনি ভাবতে পারেন বলেও স্পষ্ট করে দেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।
গত শুক্রবার টুইটারে প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হনুমান চালিশা নিয়ে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি জানান, যুবপ্রজন্ম এবং প্রবীণদের লাভের জন্য হনুমান চালিশা পাঠ করার একটি সত্য ঘটনা ভাগ করে নিচ্ছি। দ্বাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়া আমেরিকার দুটি প্রথমসারির বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন। ওয়েটিং লিস্টে থাকলে যে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া দুঃসাধ্য বিষয়।
সেই পরিস্থিতিতে ওই পড়ুয়া এবং তাঁর বাবাকে নিয়মিত হনুমান চালিশা পাঠ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তিনি দাবি করেন, হনুমানজি'কে 'অসাধ্য সাধক স্বামী' হিসেবে বলতে বলেন। যে কাজটা ওই পড়ুয়া এবং তাঁর বাবা নিয়মিত করতে থাকেন। আর এখন ওই পড়ুয়া দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েই সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তারপর পড়ুয়ার বাবার সঙ্গে হোয়্যাটসঅ্যাপে কী কথা হয়েছে, তারও লিখিত অংশ পোস্ট করেন। যাতে ওই পড়ুয়ার বয়ানে লেখা ছিল, ‘এটাই বলছিলাম যে হনুমান চালিশা পড়ার ফর্মুলা কাজে দিয়েছে।’
যে পোস্টের পর অনেকেই সেই বিষয়টি টুইট করার জন্য ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। এক নেটিজেন দাবি করেন, তিনি যখন অন্ত্বঃসত্ত্বা ছিলেন, তখন হনুমানজি'র আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। কিন্তু অনেকেই আবার ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার তুমুল সমালোচনা করেন। এক নেটিজেন বলেন, ‘এটা পুরোপুরি হাস্যকর এবং অবৈজ্ঞানিক। যে ব্যক্তি ভারতের আর্থিক নীতি তৈরি করছেন, তিনি এভাবে কখনও ধর্মকে টেনে আনেননি।’ একইসুরে অনেকেই মন্তব্য করতে থাকেন।
সেই প্রেক্ষিতে পালটা মুখ খোলেন ভারতের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তিনি দাবি করেন, পাণ্ডিত্যের সঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাসকে মানুষ গুলিয়ে ফেলেন। বরাবরই তিনি নিজের ধর্মীয় বিশ্বাসে অটল রয়েছেন। অন্যের সমালোচনা কখনও কান দিয়ে সেই বিশ্বাস থেকে সরে আসেন না। আর এবারও টুইটারে ওই পোস্ট করেন, তখন জানতেন যে ট্রোলিংয়ের মুখে পড়বেন। কিন্তু তাঁর পোস্ট থেকে যাতে একজনেরও ভালো কিছু হয়, সেজন্যই ওই টুইট করেন।