৪৭টি ভোট পেয়ে অনায়াসে আস্থা ভোটে জয়ী হল চম্পাই সোরেন নেতৃত্বাধীন জেএমএম সরকার। সম্প্রতি ইডির হাতে গ্রেফতার হন হেমন্ত সোরেন। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁর বদলে ঝাড়খণ্ডের নয়া মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন চম্পাই সোরেন। আজ চম্পাইয়ের নেতৃত্বাধীন জেএমএম সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে রজন্য আস্থা ভোট ছিল। প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট আসন ৮১। ম্যাজিক ফিগার ৪১। মহাজোটের পক্ষে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ২৯, কংগ্রেস ১৭, আরজেডি-র একজন এবং সিপিআই (এমএল)-এর একজন। সব মিলিয়ে সরকার পক্ষের ৪৮ জন বিধায়ক আছেন। এদিকে এনডিএ জোটের পক্ষে বিজেপির ২৬-সহ ৩২ জন বিধায়ক আছেন।
এদিকে ইডির হাতে গ্রেফতার হলেও আস্থা ভোটে অংশ নিতে আজ বিধানসভায় পৌঁছন হেমন্ত সোরেন। বিধানসভায় আজ ভাষণও দেন হেমন্ত সোরেন। আজ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বলেন, 'আমি কোনও কেলেঙ্কারি করেছি, তা প্রমাণ করতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগের সপক্ষে নথি থাকলে তা পেশ করা হোক। আমার গ্রেফতারির নেপথ্যে রাজভবনের ভূমিকা আছে। কিন্তু আমি ভয় পেয়ে লড়াইয়ের ময়দান ছাড়ব না। সময়ের চাকা ঘুরবে। আমি আবারও আপনাদের সামনে হাজির হব।'
এদিকে আজ বিধানসভায় ভাষণ দিতে উঠে চম্পাইয়ের অকপটে বলেন, 'আমি হেমন্ত সোরেন পার্ট ২।' চম্পাই আজ বলেন, 'গোটা দেশ আজকে দেখছে যে হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে কতটা অবিচার করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের যে কোনও গ্রামে আজ হেমন্ত সোরেনের চালু করা প্রকল্প চলছে। আমি গর্ব করে বলতে চাই আমি হেমন্ত সোরেনের দ্বিতীয় সংস্করণ।' এদিকে বিরোধী বিজেপিকে তোপ দেগে চম্পাই সোরেন বলেন, 'ঝাড়খণ্ডের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বিজেপি।'
প্রসঙ্গত, জমি সংক্রান্ত আর্থিক তছরূপ মামলায় গ্রেফতার হন হেমন্ত সোরেন। গ্রেফতারির আগে রাজ্য়পালের কাছে গিয়ে তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে আসেন। ইডি তদন্তকারীদের দাবি, তাঁদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে রাঁচিতে জমি সংক্রান্ত অনিয়মের মূল সুবিধাভোগী হেমন্ত। এই মামলায় হেমন্তের আগে একজন আইএএস সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রেজিস্ট্রার অফিসে রেকর্ড জাল করে জমির জাল দলিল তৈরি করে দালাল ও ব্যবসায়ীদের একটি নেটওয়ার্ক বছরের পর বছর ধরে এই জালিয়াতি চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে গত বছরের অগাস্ট মাস থেকে অন্তত সাতবার হেমন্তকে তলব করেছিল ইডি। এই সব ক্ষেত্রেই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন হেমন্ত। তবে সম্প্রতি গ্রেফতার হন হেমন্ত। এই আবহে ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে। ক্ষমতা ধরে রাখতে কংগ্রেস এবং জেএমএম বিধায়কদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হায়দরাবাদে। তবে আজকের আস্থা ভোটের পর নটআউট থেকে গেল জেএমএম সরকার।