এবার খলিস্তানি জঙ্গি গুরপতবন্ত সিং পান্নুন হত্যার ছক নিয়ে মুখ খুলল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের গোষ্ঠী - 'সমোসা ককাস'। পাঁচ ভারতীয় বংশোদ্ভূত আছেন এই গোষ্ঠীতে - এমি বেরা, প্রমীলা জয়পাল, রো খান্না, রাজা কৃষ্ণমূর্তি, শ্রী থানেদার। এই পাঁচজনই ডেমোক্র্যাট। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ রিপ্রেসেন্টেটিভের সদস্য তাঁরা। আর এই পাঁচ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন রাজনীতিবিদ যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে দিল্লিকে বার্তা দিয়েছেন, 'পান্নুন খুনের ছক নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক এবং দোষীদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হোক। তা না হলে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে ভারতের।' এদিকে এই 'সমোসা ককাস'-এর আরও দাবি, ভারতকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, ভবিষ্যতে এই ধরনের আর কোনও ঘটনা ঘটবে না। (আরও পড়ুন: নৈরাজ্য সৃষ্টি করে... 'সংসদ হানার মাস্টারমাইন্ড' ললিত ফাঁস করল আসল পরিকল্পনা)
'সমোসা ককাস' জানিয়েছে, পান্নুন হত্যার ছক এবং তাতে নিখিল গুপ্তার যোগ থাকা নিয়ে যা যা তথ্য তদন্তে উঠে এসেছে, মার্কিন প্রশাসন তা এক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের সামনে তুলে ধরেছে। জানা গিয়েছে, নিখিল গুপ্তাকে ইতিমধ্যেই চেক প্রজাতন্ত্রে গ্রেফতার করা হয়েছে। মার্কিন রিপোর্ট অনুযায়ী, এক ভারতীয় সরকারি আধিকারিক নিখিলের মাধ্যমে পান্নুনকে হত্যার ছক কষেছিলেন। এই আবহে নিখিল এক বন্দুকবাজকে এই কাজের জন্যে নিয়োগ করেছিলেন। তবে নিখিল যে বন্দুকবাজকে নিযুক্ত করেছিলেন, সে আদতে ছিল মার্কিন প্রশাসনেরই এজেন্ট। এই আবহে গোটা পরিকল্পনা বানচাল হয়ে যায়। এদিকে নিখিলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মার্কিন আদালতে মামলা করা হয়েছে। চেক প্রশাসন জানিয়েছে, আমেরিকার অনুরোধেই নিখিলকে তারা গ্রেফতার করেছে। এদিকে ভারতও মেনে নিয়েছে যে আমেরিকা থেকে এই সংক্রান্ত তথ্য তাদের সামনে এসেছে, এবং এই গোটা ঘটনার তদন্তের জন্যে তারা একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এদিকে ভারতের এই তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে 'সমোসা ককাস'। তবে তাদের বার্তা, এই ঘটনার সঙ্গে কোনও সরকারি কর্মী জড়িত থাকলে, তাঁরও যেন উপযুক্ত সাজা হয়।
এদিকে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক প্রসঙ্গে পাঁচ ভারতীয় বংশোদ্ভূত কংগ্রেস সদস্য বলেন, এই সম্পর্কের ফলে বিগত দিনে দুই দেশের নাগরিকদের ওপরই ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে এই মামলার নিষ্পত্তি যদি সঠিক ভাবে না হয়, তাহলে এই পার্টনারশিপে বড় প্রভাব পড়তে পারে। এদিকে এই পাঁচ ডেমোক্র্যাটই বিগত দিনে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল। তবে মোদী সরকারের ঘরোয়া রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ভারত-আমেরিকা সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন এই পাঁচজন। এই আবহে পান্নুন হত্যা নিয়ে তাঁদের এই যৌথ বিবৃতি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এর আগে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল একটা সময়ে। পান্নুন কাণ্ডের পর অবশ্য দুই দেশই দাবি করেছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে মার্কিন ঘরোয়া রাজনীতিতে যে এর প্রভাব পড়বে, তার ইঙ্গিত মিলেছে 'সমোসা ককাস'-এর যৌথ বিবৃতি থেকেই।