কেরলের কোচিতে ধর্মীয় সম্মেলনে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ল। গতকাল এই বিস্ফোরণের পরপরই জানানো হয়েছিল যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অনেকজনকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, গতকাল গভীর রাতে এই দুর্ঘটনায় জখম হওয়া এক ১২ বছর বয়সি শিশু কন্যার মৃত্যু হয়। সে এর্নাকুলাম সরকারি হাসপাতালে ভরতি ছিল। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল এই বিস্ফোরণে।
এদিকে ইতিমধ্যেই এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে ত্রিশূর থানায় গিয়ে এক ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেছেন। তার নাম ডমিনিক মার্টিন। তার দাবি সে নিজেই টিফিনবক্সে বিস্ফোরক ভরে ওখানে রেখেছিল। কালামাসেরির ঘটনা নিয়ে কেরলের অতিরিক্ত ডিজিপি অজিত কুমার জানিয়েছেন, সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, গতকাল সকাল ৯টা নাগাদ কেরলের কোচিতে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় সম্মেলনে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছিল। জেহোবা গোষ্ঠীর সম্মেলনটি চলছিল কালামাসেরির জামরা ইন্টারন্যাশানাল কনভেনশন অ্যান্ড এগজিবিশন সেন্টারে। অভিযুক্ত ডমিনিক নাকি সেই ধর্মীয় গোষ্ঠীরই সদস্য।
এদিকে এই বিস্ফোরণের ভিডিয়ো এবং ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, শার্ট পরিহিত অনেকেই মাথার ওপর হাত উঁচিয়ে হাহাকার করছেন এবং দূরে আগুন জ্বলছে। এদিকে একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলা ভষ্মীভূত দেহ পড়ে রয়েছে মাটিতে। আগুন নেভানোর জন্য সেখানে প্রচুর পরিমাণ জল ঢালা হয়েছিল। সেই জলেই ভাসছে একটি মোবাইল। এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের গ্রাউন্ড রিপোর্টে বিস্ফোরণ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ উঠে এসেছে। এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, মিটিং শুরুর আগে সব বন্ধ করে প্রার্থনা করছিল। সেই সময়ই প্রথম বিস্ফোরণটি হয়। ২ সেকেন্ড পর ফের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কনভেনশন সেন্টারটি। সব মিলিয়ে অন্তত তিনবার বিস্ফোরণ হয় সেখানে। গোটা কনভেনশন সেন্টার কালো ধোঁয়ায় ভরে ওঠে।
এই বিস্ফোরণের খবর পেয়েই কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রের তরফে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় এই ঘটনায়। এদিকে এই বিস্ফোরণকাণ্ডে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর প্রশ্ন তুলেছেন, কেরলের সাংসদ হয়েও রাহুল গান্ধী কেন এই ঘটনা নিয়ে নীরব। তিনি আরও প্রশ্ন করেন, 'বাইরে থেকে এসে ভারতে এই ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন অনেকে। তারা কারা?'