উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা একটি ট্রাকের ভেতর উদ্ধার ১৯৪৬টি কচ্ছপ। সোমবার ভোরে এই বিপুল পরিমাণ কচ্ছপ বাজেয়াপ্ত করেছে গোপালগঞ্জ থানার পুলিশ। সূত্র মারফত খবর পেয়ে এদিন কুচাইকোট থানা এলাকার বল্থারি চেকপোস্টের সামনে ওই ট্রাকে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ট্রাকের ভেতর থাকা একাধিক বাক্স থেকে পাওয়া গিয়েছে ওই কচ্ছপগুলিকে। পরে তা বন দফতরের আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঘটনায় গ্রেফতার দু’জন বনগাঁর বাসিন্দা।
সারন রেঞ্জের ডিআইজি মনু মহারাজা জানিয়েছেন, বিহার–উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে একটি ট্রাকে তল্লাশি চালানোর সময় বিপুল পরিমাণে কচ্ছপ উদ্ধার করে পুলিশের একটি দল। এ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থানা এলাকার বাসিন্দা বিধান বৈরাগী ও রঞ্জিৎ মিশ্রকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। জেরা চলাকালীন তারা জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে পশ্চিমবঙ্গের ডালকোলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কচ্ছপগুলিকে। ১৯৪৬টি কচ্ছপের মধ্যে ২৩১টিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মাঝেমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলা থেকে পশ্চিমবঙ্গে কচ্ছপ পাচার করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে এভাবেই বিশাল পরিমাণে কচ্ছপ উদ্ধার করেছে আরপিএফ বা জিআরপি। এর মাংস ও ঔষধি গুণমানের জন্যই কচ্ছপ পাচার করা হয়। তবে মূলত কচ্ছপের মাংসের জন্য পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে চলে এই অবৈধ পাচারের কারবার। এছাড়া থাইল্যান্ডেও কচ্ছপ রপ্তানি করা হয় কারণ সেখানে এর মাংসের স্যুপ খুবই জনপ্রিয়।
এ ছাড়াও যৌনাঙ্গের আকার বৃদ্ধি এবং পুরুষ ও মহিলাদের যৌনক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ওষুধ তৈরিতে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডে কচ্ছপ পাচার করা হয়। পাচারকারীদের কাছ থেকে অনেকে কচ্ছপ কেনে, সেগুলি পোষ্য হিসেবে রাখার জন্য। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের চাহিদা ও পছন্দের ওপর এক–একটি কচ্ছপের দাম নির্ভর করে। বন্যজীবন সুরক্ষা আইন, ১৯৭২ অনুযায়ী এই জাতীয় প্রাণীর বাণিজ্যকরণ নিষিদ্ধ। ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা কিলো দরে বিক্রি হয় কচ্ছপ।
গোপালগঞ্জ সদরের এসডিপিও নরেশ পাসওয়ান জানান, এ ঘটনায় বন্যজীবন সুরক্ষা আইন, ১৯৭২ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।