সততার আসল নজির দেখা গেল পড়শি দেশে। পাকিস্তানের করাচিতে গত সপ্তাহের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েও আসন ছাড়লেন একজন সৎ বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদ। ওই রাজনীতিবিদের দাবি, ভোটে তাঁকে জেতানোর জন্য তাঁর পক্ষে কারচুপি করা হয়েছিল। এই কারণেই তিনি বিজয়ীর আসন আসন গ্রহণ করতে পারবেন না।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ উঠেছিল যে কারাবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজিত করার জন্য কারচুপি করা হচ্ছে। অভিযোগ সত্ত্বেও, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এই দাবিগুলি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে যে দেশটি নির্দিষ্ট অভিযোগের তদন্তের জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা রেখেছে। তবে ইমরান খানের প্রতিপক্ষ ইসলামপন্থী জামায়াত-ই-ইসলামি দলের ওই সদস্যকে বিজয়ী ঘোষণা করার পরপরই আসন ত্যাগ করেছেন তিনি।
- কে এই রাজনীতিবিদ? কারচুপি আবিষ্কার করলেন কীভাবে?
নাম হাফিজ নইম উর রহমান, ইসলামপন্থী জামায়াত-ই-ইসলামি দলের সদস্য তিনি। করাচির প্রাদেশিক আসন ১২৯-এ ২৬,০০০-এর বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু, রেহমান বলেছেন যে তিনি এই ভোট গণনায় অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছিলেন, যখন ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টি-সমর্থিত নির্দিল প্রার্থী সাইফ বারির জন্য ভোটের সংখ্যা ৩১,০০০ থেকে ১১,০০০ পর্যন্ত কমে গিয়েছিল।
এরপরই রেহমান জনমতকে সম্মান করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে জানিয়েছেন, 'জয়ীকে বিজয়ী হতে দিন, পরাজিতকে হারতে দিন এবং কেউ যেন এর অতিরিক্ত কিছু না পেয়ে যান।' এমনটা বলেই তিনি ঘোষণা করেছেন, তিনি বিজয়ীর আসন গ্রহণ করবেন না। যে আসলে বিজয়ী এই আসন তাঁরই প্রাপ্য, তাঁকেই যথাযথভাবে পুরস্কৃত করা উচিত। এ বিষয়ে সাইফ বারির এখনও পর্যন্ত কোনও মুখ খোলেননি। তবে পিটিআই জানিয়েছে যে প্রতিক্রিয়া জানাতে আরও সময় প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সাড়া দেয়নি।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে সরকার গড়তে চলেছে নওয়াজ শরিফ ও বিলাবল ভুট্টোর দল একজোট হয়ে। ইমরান খানের দলের সমর্থিত নির্দলরা প্রাথমিক ভাবে অনেক আসনে এগিয়ে থাকলেও শেষপর্যন্ত একত্রিত ভাবেও সংখ্য়াগরিষ্ঠতার থেকে অনেক কমে শেষ করে। কিন্তু বহুক্ষেত্রেই হঠাৎ করে লিড কমে যাওয়ার খবর শোনা গিয়েছিল। সৎ রাজনীতিবিদ নইমের কথায় ফের শিরোনামে এসে গেল অসঙ্গতির অভিযোগ।