ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানো এবং মনিটাইজ করার জন্য কি না করতে পারেন ক্রিয়েটররা। তার একটি প্রমাণ পাওয়া গেল ওড়িশায়। স্ত্রীর ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজ করার জন্য পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র আপলোড করে দিলেন শিক্ষক। তার ফলে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয় ভিডিয়ো। একইসঙ্গে ওই ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার লাফিয়ে বাড়ে ঠিকই। তবে রেহাই পেলেন না শিক্ষক। প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার জাজপুরের একটি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই সহকারী শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে সাইবার পুলিশ। অভিযুক্তের নাম জগন্নাথ কর ।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন অভিযুক্ত ছাত্রীর বাবা
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির প্রশ্নপত্র ওই ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেছিলেন। সেই সমস্ত ভিডিয়ো কয়েকদিনের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। জাজপুর জেলার ওই স্কুলের নাম গোপীনাথ ইহুদি নোডাল উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের সহকারী শিক্ষকের স্ত্রীও মামলার সহ-অভিযুক্ত। তবে তাঁর দুধের শিশু থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি।
জানা গিয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ জানিয়ে ওডিশা স্কুল এডুকেশন প্রোগ্রাম অথরিটি (ওসেপা)-এর প্রকল্প পরিচালক অনুপম সাহা সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন। গত ১৮ মার্চ তিনি সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির সমষ্টিগত মূল্যায়ন-২-এর প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং প্রচার করেছে। যদিও প্রথমে তারা কেউই জানতেন না যে এই কাজ করেছেন তিনি একজন শিক্ষক।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার প্রতীক সিং জানান, ‘তদন্তের সময় জানা গিয়েছে ওই শিক্ষক পরীক্ষার প্রায় এক সপ্তাহ আগে গত মার্চ বিদ্যালয়ের কাছ থেকে ইতারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পক্ষে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। স্কুলে প্রশ্ন জমা দেওয়ার আগে বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ফোনে প্রশ্নপত্র স্ক্যান করেন। পরেই ওই দিনই ইউটিউব চ্যানেলে প্রশ্নপত্রগুলি আপলোড করেন।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশ্নপত্র আপলোড করার ওই ইউটিউব চ্যানেলে ৫০০০ হাজার সাবস্ক্রাইবার ছিল। তবে প্রশ্নপত্রগুলি আপলোড করতেই সাবস্ক্রাইবার বেড়ে ৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ হয়ে যায়। ডিসি জানান, ওই দম্পতির উদ্দেশ্য ছিল তাদের ভিডিয়োতে আরও বেশি সাবস্ক্রাইবার, লাইক এবং শেয়ার বাড়ানো এবং ইউটিউব চ্যানেল থেকে অর্থ উপার্জন করা। তারা ইউটিউব চ্যানেল থেকে কত আয় করেছে তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।