কে নয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন? তা নিয়ে যেন সার্কাস চলছে পাকিস্তানে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তিনটি বড় দলই (তেহরিক-ই-ইনসাফ, পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজ শরিফ এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি) নিজেদের প্রার্থীকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসাতে চাইছে। সেই রেশ ধরে প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী করার জন্য পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ শরিফ) সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি। যে দল এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয় বৃহত্তম দল হয়েছে। তা সত্ত্বেও পঞ্জাব প্রদেশে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে পাকিস্তান মুসলিম লিগকে (নওয়াজ শরিফ) সমর্থনের টোপ ঝুলিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি নিজেদের কাছে রাখতে চাইছে। যদিও পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ শরিফ) একেবারেই সেই ‘ডিল’-এ আগ্রহী নয়।
সূত্রের খবর, দাদা নওয়াজ এবং দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ শরিফ) সভাপতি শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন যে শুক্রবারের রাতে বৈঠকে বিলাওয়ালকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কুর্সিতে বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি। যদিও পাকিস্তান পিপলস পার্টির থেকে বেশি আসন জিতেও প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়তে একেবারেই রাজি নয় পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ শরিফ)। যে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ শরিফ) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির জোট সরকার ২০২২ সালে ইমরান খানের বিদায়ের পরে দেশের শাসনভার সামলাচ্ছিল।
সেটা মাথায় রেখেও বিলাওয়ালকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসানোর যে চেষ্টা চালানো হচ্ছে, তাতে সন্তুষ্ট নন পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতারাই। দলের তথ্য বিষয়ক সচিব ফয়জল করিম কুন্ডি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি না মজবুত জোট হয়, তাহলে স্রেফ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে লাভ নেই। বরং বিলাওয়ালের বিরোধী আসনে বসা উচিত বলে মন্তব্য করেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির তথ্য বিষয়ক সচিব।
তাছাড়াও তিনটি প্রধান দলের মধ্যে এবার পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় সংসদে সবথেকে কম আসন পেয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি। ৯৩টি আসন জিতেছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের সমর্থিত প্রার্থীরা। ৭৫টি আসনে জিতেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ শরিফ)। পাকিস্তান পিপলস পার্টির ঝুলিতে এসেছে ৫৪টি আসন। আর অন্যান্যরা ৪২টি আসনে জিতেছে।
সেই পরিস্থিতিতে বিলাওয়ালের পক্ষে যে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা অত্যন্ত কঠিন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যে বিলাওয়ালের একাধিকবার ‘ক্লাস’ নিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। কাশ্মীর ইস্যু থেকে সন্ত্রাসবাদ- একাধিকবার তৎকালীন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীকে তুমুল আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। বিশ্বমঞ্চে জয়শংকরের সামনে চূড়ান্ত অস্বস্তির মুখে পড়েছেন বিলাওয়াল।