আরও একবার মোদী পদবী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মানহানি মামলায় দেশের শীর্ষ আদালতকে রাহুল গান্ধী সাফ জানালেন তিনি ক্ষমা চাইবেন না। সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা এক হলফনামায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন,'অপরাধের নিরিখে ক্ষমা চাওয়ার থাকলে, আগেই চাওয়া হত'। ফলে হাইভোল্টেজ মোদী-পদবী মন্তব্য বিতর্কে দেশের শীর্ষ আদালতকেও রাহুল জানিয়ে দিলেন যে, তিনি কোনও মতেই ক্ষমা চাইবেন না।
কেরলের ওয়েনাদের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে কর্ণাটকে এক সভায় মোদী পদবী ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে। যে অভিযোগ ঘিরে গুজরাটে, বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী একটি মামলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাহুলের মন্তব্য ভাবাবেগে আঘাত করেছে। এদিকে, এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে ২ বছরের কারাবাসের সাজা শোনায় গুজরাটের সুরাট কোর্ট। মামলা এরপর যায় গুজরাট হাইকোর্টে। যেখানে রাহুলের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ জারির আবেদন খারিজ করে কোর্ট। কোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল। এরপর সুপ্রিম কোর্টে চলে মামলা। মামলায় রাহুল সুপ্রিম কোর্টের কাছে হলফনামায় বলেছেন, আইনকে ব্যবহার করে ‘অপরাধমূলক পন্থায়’, 'বিচারব্যবস্থাকে ভুলভাবে ব্যবহার করে' তাঁকে জোর করা হচ্ছে ‘বিনা দোষে’ ক্ষমা চাওয়ার জন্য।
এদিন সুপ্রিম কোর্টে রাহুল গান্ধী যে রিজয়েন্ডার হলফনামা পেশ করেন, তাতে লেখা রয়েছে,'পিটিশনার জানাচ্ছেন যে, তিনি সর্বদাই এটা তুলেে ধরেছেন যে, যে তিনি অপরাধের জন্য দোষী নন। অপরাধ সংগঠিত করার নিরিখে যদি তাঁকে ক্ষমতা চাইতে হত, তাহলে আগেই তিনি ক্ষমা চাইতেন।' এর আগে, রাহুলের বিরুদ্ধে এই মামলায় হলফনামা পেশ করেছেন মামলার অপর পক্ষের তরফে পূর্ণেশ মোদী। সেখানে পূর্ণেশ দাবি করেছেন যে, এই মামলায় রাহুল গান্ধী কেবল নিজের অহংকার ও জেদকে ধরে রেখেছেন। পূর্ণেশের সেই হলফনামার প্রেক্ষিতে এই রিজয়েন্ডার হলফনামা পেশ করেন রাহুল। রাহুল তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে দাবি করেন যে, 'মোদী' নাম নিয়ে কোনও আলাদা সম্প্রদায় বা 'সমাজ' নেই। তাঁর দাবি, মোদী পদবী সম্পন্ন মানুষ বিভিন্ন জাতি বা শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন। রাহুলের হলফনামা বলছে, ‘ রেকর্ড বলছে, কোনও মোদী সমাজ বা সম্প্রদায় নেই। শুধু মোধ ঘাঞ্চি সমাজ ও মোদী বণিকা সমাজ রয়েছে। ’ কোর্টকে জানানো হয় রাহুলের তরফে, ‘নীরব মোদী, ললিত মোদী এবং মেহুল চোকসি সবাই একই শ্রেণির মধ্যে পড়েন না’। উল্লেখ্য, মোদী পদবী ঘিরে মামলায় রাহুল সুরাট কোর্টে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যায়।