এই কারণেই কি শাহরুখ খান আলাদা? বুধবার কেএল রাহুলের সঙ্গে লখনউ সুপার জায়ান্টসের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কার কথা বলার ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে তেমনটাই মনে করছেন নেটিজেনদের একাংশ। যে ভিডিয়োয় গোয়েঙ্কাকে বেশ উত্তেজিতভাবে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। তাঁকে এতটাই উত্তেজিত লাগছিল যে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ তো বলে দেন, এই আলোচনাটা ড্রেসিংরুমের মধ্যে হতে পারে। সেই পরিস্থিতিতে নেটিজেনরা দাবি করেছেন, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে লখনউয়ের লজ্জাজনক হারের পরে রাহুলের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন গোয়েঙ্কা, তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বরং এরকম লজ্জাজনক হারের পরে শাহরুখ যেভাবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সেটাই দৃষ্টান্ত হওয়া উচিত। ২৬১ রান তুলেও পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ার পরে দলের খেলোয়াড়দের মনোবল বাড়াতে প্র্যাকটিসেও এসেছিলেন। যা তিনি কখনও করেন না। আর তারপরই পরপর তিনটি ম্যাচ জিতে আইপিএলের লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে কেকেআর। তাই খেলোয়াড়দের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হবে, তা শাহরুখের থেকে শেখা উচিত গোয়েঙ্কার।
শাহরুখে মুগ্ধ নেটপাড়া
এক নেটিজেন বলেছেন, 'রাহুলের সঙ্গে যেরকম আচরণ করলেন গোয়েঙ্কা, সেটা থেকে একটা কথা বলতে পারি, কেকেআর ভাগ্যবান যে শাহরুখ খানের মতো একজনকে মালিক হিসেবে পেয়েছে।' অপর একজন গোয়েঙ্কার ভিডিয়ো শেয়ার করে বলেছেন, ‘ঠিক উলটো কাজটা করেছিলেন শাহরুখ। যখন পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিল কেকেআর, তখন শাহরুখ নাকি কেকেআরের উপর খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না। ম্যাচের পরে খেলোয়াড়দের সঙ্গেও দেখা করেননি। যা বিরল ঘটনা। তবে তিনি কলকাতায় থেকে গিয়েছিলেন। একদিন পরে বোলারদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। অনুশীলনেও এসেছিলেন। যা তিনি সচরাচর করেন না।’
অপর এক নেটিজেন জানান, রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধেও জেতা ম্যাচে হেরে গিয়েছিল কেকেআর। তারপরও দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভালো আচরণ করেছিলেন শাহরুখ। এমনকী যে জস বাটলারের কারণে কেকেআর হেরে গিয়েছিল, তাঁকেও ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন। অপর এক নেটিজেন বলেন, ‘আমি একেবারেই শাহরুখ খানকে পছন্দ করি না। কিন্তু দল হেরে যাওয়ার পরও উনি যেভাবে সমর্থন জোগান, সেটা সত্যি প্রশংসনীয়।’
এক নেটিজেন আবার কেকেআরের অপর মালিক জুহি চাওলার একটি পুরনো ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন। ওই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আইপিএলের ম্যাচ চলছে। আমার মনে হয় যে আমরা যদি সবাই পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকি - শাহরুখ, আমি, জয় (জয় মেহতা), তাহলে বিশেষ কিছু হয়ে যাবে। এমন এনার্জি চলে আসবে যে আমরা দুর্দান্ত খেলব। তো আমরা ওখানে দাঁড়িয়ে আছি। ধরা যাক, ম্যাচটা আমরা হেরে যাচ্ছি। শাহরুখ বকা দিতে থাকে। (বলে যে), এটা কীরকম বোলিং করছে, ফিল্ডিং অনুযায়ী বল হচ্ছে না, এটা ঠিক নেই, ওটা ঠিক নেই। আমি টিম মিটিং ডাকব।’
তিনি আরও বলেন, তারপর আমরা ম্যাচটা হেরেও গেলাম। তারপর টিম মিটিং ডাকে। আমরা ভাবি যে আজ সকলের ক্লাস নেবে। আমরাও যাই। কিন্তু মিটিংয়ে ওইসব বিষয় নিয়ে কোনও কথাই বলে না। শাহরুখ এই কথা, ওই কথা বলতে থাকে। এই মজাদার কথা, ওই মজাদার কথা (বলতে থাকে)। কাউকে কিছু বলে না। শেষে শুধু বলে নে ভালো করে খেল।'
আরও পড়ুন: MI, KKR, RCB, CSK সকলকে পিছনে ফেলল SRH! ছক্কা মারার নিরিখে IPL-এ নতুন ইতিহাস লিখল কামিন্সের দল
ফিরল ধোনির স্মৃতিও
বুধবার গোয়েঙ্কার আচরণ দেখে নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন যে রাহুলের অধিনায়কত্ব বেশিদিন থাকবে না। আর সেক্ষেত্রে অনেকের মহেন্দ্র সিং ধোনির অধ্যায়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ২০১৬ সালের আইপিএলে ধোনির অধিনায়কত্বে একেবারে বাজে পারফরম্যান্স করেছিল গোয়েঙ্কার দল রাইজিং পুণে সুপার জায়ান্টস। পরের বছরই ধোনিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্টিভ স্মিথ অধিনায়কত্ব করেছিলেন। তাঁর অধিনায়কত্বে ফাইনালে উঠেছিল পুণে। এক নেটিজেন বলেন, ‘২০১৭ সালে ধোনিকে ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন গোয়েঙ্কা। তারপর ফের আইপিএল ট্রফি জেতেন ধোনি।’