সদ্য কাছের মানুষকে হারিয়েছেন লোপামুদ্রা মিত্র। সেই যন্ত্রণা বুকে চেপেই ফের মঞ্চ মাতাতে উদ্যোগী শিল্পী। বাঙালির প্রাণের ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ। আধুনিক গান তাঁকে জনপ্রিয়তা দিলেও রবি ঠাকুরের গান ছোট থেকেই প্রিয় লোপামুদ্রার। সদ্য রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করেছে গোটা বাংলা। সেই উপলক্ষ্যেই আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার মঞ্চে রবীন্দ্রনাথকে গানে গানে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবেন লোপামুদ্রা। আরও পড়ুন-'একটা ইঞ্জিন একটু পুরোনো', কী নিয়ে ৫ বছরের ছোট বর জয়কে খোঁটা দিলেন লোপামুদ্রা?
টেকনো গ্রুপের কো-চেয়ার পার্সন মৌ রায়চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিলেন শিল্পী। এই গ্রুপেরই একটি কলেজের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দ্য শো মাস্ট গো অন’-এর বার্তা দিয়ে সেই কথা পোস্ট করতেই ধেয়ে এল কটাক্ষ। ‘ধাধিনা নাতিনা’ গায়িকার গলায় নাকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান মোটেই মানায় না, স্পষ্ট জানালেন এর জনৈক। প্রসংশা যেমন মাথা পেতে নেন, তেমন সমালোচনা হজম করতেও জানেন লোপা। তাই বলে চুপ থাকেন। বরং সেই নেট নাগরিককে উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন।
ট্রোলার লেখে, ‘এটা আপনার গলায় মানায় না, কোনওদিক দিয়েই। সমীর চট্টোপাধ্যায়ের গানই ভালো এই গলায়, মতামত ব্যক্তিগত’। চুপ থাকেননি লোপা। তিনি পালটা জবাব দেন। লেখেন, ‘আমি জানি। কিন্তু রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে ভালোবাসি। কেউ গাইতে বললে, লোভ সামলাতে পারি না যে! মানুষ তো!! আপনি রাগ করবেন না। প্রচারে তো থাকতে হবে’।
লোপামুদ্রা সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই স্পষ্টবক্তা। দীর্ঘ তিন দশকের কেরিয়ার তাঁর। এত বছর ধরে বহু মানুষের অনুপ্রেরণা তিনি, দীর্ঘ সফরে বাংলা গানের ইন্ডাস্ট্রির অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছেন গায়িকা। লোপার এই উত্তরের প্রশংসায় তাঁর অনুরাগীরা। কেউ লেখেন, ‘ভগবান তোমাকে আরও শক্তি দিক’। কেউ বললেন, ‘এগিয়ে যাও দিদি’। অনেকে আবার শিল্পীকে উপদেশও দিলেন। একজন লেখেন, ‘তারসপ্তকে আপনার কন্ঠ সাবলীল এবং শ্রুতিমধুর। সেই অনুযায়ী গান নির্বাচন করবেন।’ তা নির্দ্বিধায় মেনেও নেন লোপা।
প্রসঙ্গত, মৌ রায়চৌধুরীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে লোপা লিখেছিলেন, ‘মৌ, হাসিমুখে চলে গেলে, কিন্তু , তোমার চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছি না যে। প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতাম আমরা। তুমি জানতে, বুঝতে, আমি কি ভালোবাসি, কি বাসি না। কতদিন থেকে যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি তোমাদের বাড়ি। আমার আর জয়ের মতো সকলের মনেরই আজ এই অবস্থা, যারা তোমাকে একটু কাছ থেকে দেখেছে, বুঝেছে। তোমার মতো মনের জোর আর পজিটিভ শক্তির মেয়ে আমি খুব কম দেখেছি। আমার মা ছিলেন, আর তুমি। সকলকে আগলে রাখার আরেকজন মানুষ। তুমি মনের মাঝে থাকবে আমাদের। আমাদের সহজ পরব, সে ও একজন কাছের মানুষকে হারালো। দিয়েছো, বিনিময়ে চাওনি কিছু , কোনওদিন। কে পারে ? এভাবে ?’