রামেশ্বরম কাফে শপে বিস্ফোরণের ঘটনায় নতুন তথ্য হাতে পেল এনআইএ। এই ঘটনা নিয়ে এখন জোরদার তদন্ত চলছে। তাতেই উঠে এসেছে আবদুল মতিন ত্বহা টেলিগ্রাম অ্যাপের সাহায্যে আইএস নামে একটি গ্রুপ খুলেছিল। এই অ্যাপটি নিয়ন্ত্রণ করত ত্বহা এবং সিরিয়ার এক হ্যান্ডলার। বিস্ফোরণের পর এই টেলিগ্রাম অ্যাপের সাহায্যে শহরে বসে ওই গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে চ্যাট করত এই আইএস জঙ্গি। ত্বহার অনুগামীরা এই নাশকতার পর ত্বহার হয়ে নানা জায়গায় সাফাই দিচ্ছিল। এবার তাদের ডাকা শুরু হয়েছে। এই টেলিগ্রাম অ্যাপে আইএস জঙ্গি সংগঠনের গ্রুপে বাংলার সাত যুবক ছিল বলে এনআইএ তথ্য পেয়েছে। এই গ্রুপটির অ্যাডমিন ছিল রামেশ্বরম কাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনার মূলচক্রী আবদুল মতিন আহমেদ ত্বহা। এই মতিন তার সঙ্গী মুসাভির হুসেনের সঙ্গে বাংলার নানা জায়গা ঘুরে কলকাতাতেই নানা হোটেলে গা ঢাকা দিয়েছিল।
এদিকে পরে কলকাতা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে গা–ঢাকা দেয় তারা। সেখান থেকে গ্রেফতার করে এনআইএ। বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার মোজাম্মেল শরিফকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অনলাইনে তার সঙ্গে ত্বহার পরিচয় হয়। তারপর তাকে ওই গ্রুপে যুক্ত করা হয়। ওই গ্রুপে সদস্য সংখ্যা ছিল কুড়ির বেশি বলেই সূত্রের খবর। এই গ্রুপে সিরিয়ার হ্যান্ডলার আইএসের হামলা নিয়ে নানা ভিডিয়ো পোস্ট করত। কেমন করে কাজ করতে হবে তার কৌশল এভাবেই শেখায় সিরিয়ার ওই হ্যান্ডলার। ত্বহা ওই গ্রুপে নাশকতা নিয়ে আলোচনা করত। এই গ্রুপের সদস্যদের বেশিরভাগই ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার এবং বিস্ফোরক তৈরিতে দক্ষ। ওই গ্রুপে তিনজন অ্যাডমিনের মধ্যে একজন সিরিয়ার জঙ্গি। দ্বিতীয় আবদুল মতিন। তৃতীয় অ্যাডমিন এই দেশের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: শেষ অর্থবর্ষে সর্বোচ্চ রাজস্ব দিয়েছে গার্ডেনরিচ, বিতর্কের মধ্যে খুশির খবর কলকাতা পুরসভায়
অন্যদিকে রোজই নতুন ইন্টারনাল অ্যাপ দিয়ে চলত কথা। পড়ুয়াদের জঙ্গি কার্যকলাপে উদ্বুব্ধ করার জন্য নানা ধরনের মেসেজ পাঠানো হতো বলে খবর। তাতে আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই আইএসে যোগ দেয়। এই গ্রুপের মধ্যে সাতজনই বাংলার বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছে এনআইএ। কলকাতায় কেউ থাকতে পারে সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেকের বিষয়ে এখন খোঁজখবর নিচ্ছেন এনআইএ গোয়েন্দারা। এই গোটা বিষয়টি মনিটরিং করত আইটি বিশেষজ্ঞ আবদুল মতিন। দেশবিরোধী ছবি ও ভিডিয়ো গ্রুপে পোস্ট করা হতো। বাংলা সম্পর্কে ধারণা আছে এমন একজন সদস্য ছিল ওই গ্রুপে।
এছাড়া লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে হেভিওয়েট নেতাদের উপর হামলা করার ছক ছিল তাদের। সেই বিষয়ে এই গ্রুপে আলোচনা হয়েছে। ওই সাতজনকে এখন পাকড়াও করতে চাইছে এনআইএ। ওই গ্রুপেই বাংলায় থাকার নিরাপদ আশ্রয় কোথায় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। তারপর একাধিকবার ট্রেন বদল করে কলকাতায় এসে পৌঁছয় ত্বহা এবং মুসাভির। ওই দু’জন সিরিয়ার হ্যান্ডলারের কাছে টাকাও চেয়েছিল গ্রুপের মাধ্যমে। তখন বড় অঙ্কের টাকা ক্রিপ্টোর কারেন্সির মাধ্যমে পৌঁছয় মোজাম্মেলের হাতে। পরে সেই টাকার একটা অংশ যায় এই দুই অভিযুক্তের কাছে।