আইপিসি এবং সিআরপিসির বিধানগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে লোকসভায় আজ ৩টি বিল উত্থাপন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। এই বিল পেশ করে অমিত শাহ জানান, ব্রিটিশ জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে বাতিল করবে সরকার। এর বদলে সন্ত্রাসবাদ এবং দেশদ্রোহিতা নিয়ে আরও কঠোর বিধান আসছে। অমিত শাহ আজ জানান, আইপিসি, সিআরপিসি এবং ভারতীয় এভিডেন্স অ্যাক্ট এর বদলে নয়া আইন ব্যবস্থা কার্যকর করতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল, ২০২৩ পেশ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র আগেই জানিয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধির যে ১২৪এ ধারা রাষ্ট্রদ্রোহকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে, সেই ধারার সংশোধনের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। সেই মতো ভারতীয় দণ্ডবিধইর ১২৪এ ধারার বদলে নয়া বিলে ১৫০ নং ধারা আনা হচ্ছে। রাষ্ট্রদ্রোহ, বা সন্ত্রাসবাদের প্রেক্ষিতে এই বিধানে বিচার হবে দোষীর। সেই ক্ষেত্রে আজীবন কারাবাস হতে পারে দোষীর। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যতদিন ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারার বৈধতা নিয়ে পুনর্বিবেচনা প্রক্রিয়া চলছে ততদিন যেন রাজ্য বা কেন্দ্র এই আইনে কারও বিরুদ্ধে মামলা রুজু না করে। এবার পুরনো ১২৪এ ধারা বাতিল করে নয়া বিধান আনার জন্য সংসদে বিল পেশ করলেন অমিত শাহ।
এই বিষয়ে সংসদে অমিত শাহ আজ বলেন, ‘১৮৬০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা ব্রিটিশদের তৈরি আইন অনুসারে কাজ করেছিল। তবে এই তিনটি আইনে বদল আনা হবে এবং দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।’ অমিত শাহ আরও জানান, নয়া বিল কার্যকর হলে পুলিশ নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। তিনি বলেন, 'এই বিলের মাধ্যমে আমরা একদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে বাতিল করছি, অপরদিকে মহিলাদের ওপর যারা অত্যাচার করবে এবং গণধোলাইয়ের আসামিদের সাজা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।'
প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারা বা রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের করা হয় শীর্ষ আদালতে। এরপরই আইনটি স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে গত মে মাসে আদালতে কেন্দ্র জানায় যে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারাটিকে নতুন করে লিখবে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে নয়া বিলে বিধান পেশ করা হয়েছে দেশকে অখণ্ড রাখার। এই আবহে সন্ত্রাসবাদ এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিরুদ্ধে ১৫০ নং ধারায় বলা হয়েছে, কেউ জেনে বুঝে যদি মৌখিক ভাবে বা লিখিত ভাবে দেশের অখণ্ডতারে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে। বা কেউ আর্থিক মদত দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানে বা বিচ্ছিনাবাদে পরোক্ষ বা সরাসরি যুক্ত থাকে তাহলে আজীবন কারাবাসের সাজা শোনানো হবে। প্রয়োজনে সেই সাজার মেয়াদ ৭ বছর বাড়িয়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হবে।