হিন্দি হল জাতীয় ভাষা। ফলে ভিন রাজ্যের ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীরা হিন্দিতে জবানবন্দি দিতে পারবেন। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে স্থানান্তর করার আর্জি সংক্রান্ত একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘হিন্দি একটি জাতীয় ভাষা। সাক্ষীরা অন্য রাজ্যের হলেও ট্রাইব্যুনালে হিন্দিতে যোগাযোগ করতে পারবেন বা জবানবন্দী দিতে পারবেন।’ এই পর্যবেক্ষণ করার পর মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের একক বেঞ্চের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের পোস্টিং দুর্নীতি মামলা ধাক্কা সুপ্রিম কোর্টে, অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের ফারুক্কাবাদে মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে (এমএসিটি) একটি মামলা চলছে। ঘাতক গাড়ির মালিক প্রমোদ সিনহা সেই মামলাটি উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিঙের মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করাতে চাইছিলেন। তার জন্য তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। আদালতে গিয়ে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, এই মামলার সমস্ত সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির বাসিন্দা। তাই মামলা প্রক্রিয়ার চলার সময় ভাষা একটি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই তিনি মামলাটি পশ্চিমবঙ্গে দার্জিলিংয়ের মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের আর্জি জানান। যদিও আদালতের কাছে এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য হয়নি।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘ভারতের মতো বৈচিত্র্যময় একটি দেশে এটি নিঃসন্দেহে সত্যি যে মানুষ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলেন। কমপক্ষে ২২টি সরকারি ভাষা রয়েছে। তবে, হিন্দি জাতীয় ভাষা হওয়ায় সাক্ষীদের কাছ থেকে এটি আশা করা যায়, যে উত্তরপ্রদেশের মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে তাঁরা হিন্দিতে যোগাযোগ করতে পারবেন অথবা সাক্ষী দিতে পারবেন।’ আবেদনকারী দাবি করেছিলেন, দুর্ঘটনাটি শিলিগুড়িতে হয়েছিল। তাই দর্জিংয়ের মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তর করা ঠিক হবে।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘১৯৮৮ সালের মোটর ভেহিকেল আইনের ১৬৬ ধারার অধীনে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক নয় যে যে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানেই মামলা করতে হবে। যেখানে গাড়ির মালিক থাকেন বা অভিযুক্ত যেখানে থাকেন সেখানকার মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালের এক্তিয়ার রয়েছে। তাই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।’