তালিবান শাসন কায়েমের পর থেকেই আফগানিস্তানের মেয়েদের ওপর একের পর এক জোর জুলুম, ফতোয়া জারি করে চলেছে তালিবান শাসকেরা। এবারে বন্ধ হল মেয়েদের বিদেশ যাত্রা। চলতি সপ্তাহের বুধবার দুবাই-ভিত্তিক একটি সংগঠনের প্রধান জানিয়েছিলেন, যে আফগানিস্তানের তালিবান কর্তৃপক্ষ প্রায় ১০০ জন মহিলাকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে যাওয়ার অনুমোদন দেয়নি। উচ্চ শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়েই তারা ইউএইতে যাচ্ছিলেন।
আল হাবতুর গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান খালাফ আহমাদ আল হাবতুর এক্স সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি ভিডিয়োতে বলেন, তিনি মহিলা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য স্পনসর করার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং একটি বিমানের জন্য তিনি অর্থ প্রদান করেছিলেন। বুধবার সকালে তাদের সংযুক্ত আরব আমিরাশাহির উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয় না তালিবানি ফতোয়ার কারণে।
ভিডিয়ো বার্তায় খালাফ বলেন, ‘এখানে যে মেয়েরা পড়াশোনা করতে আসছিল, তাদের বিদেশ যাত্রার অনুমতি দেয়নি তালিবান সরকার। একশোটি মেয়ের বিমান ভাড়া সহ শিক্ষার জন্য আমি স্পনসর করেছিলাম। কিন্তু তারা বিমান উঠতে পারেনি। এখানেও থাকার ব্যবস্থা, শিক্ষা, পরিবহণ কিংবা নিরাপত্তা সমস্ত কিছুর ব্যবস্থাই ছিল।’
এ’বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি তালেবান প্রশাসন এবং আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রদের তরফ থেকে। আল হাবতুর আফগান এক ছাত্রীর অডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ওই ছাত্রীটি বলে, তার সাথে একজন পুরুষ সঙ্গী ছিল, কিন্তু তবুও কাবুল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাকে এবং অন্যদের ফ্লাইটে উঠতে বাধা দেয়। ইতিপূর্বেই তালেবান প্রশাসন আফগানিস্তানে ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় বন্ধগুলি করে দিয়েছে। ফলে উচ্চ শিক্ষার দরজা কার্যত বন্ধ আফগান নারীদের জন্য।
তালেবান নিয়ম অনুসারে, আফগান নারীরা বর্তমানে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম তথা বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি পায় সঙ্গে কোনও পুরুষ আত্মীয় থাকলে। কিন্তু সেই নিয়মকেও তারা বুড়ো আঙুল দেখাল এই ক্ষেত্রে। এই অন্ধকার রাত্রি কবে শেষ হবে, কবে মেয়েদের জন্য মুক্ত হলে নিজেদের দেশ, শিক্ষাব্যবস্থা, উত্তর জানা নেই কারও।