পরিচয়ে হকার। ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন তাই বলছে। কিন্তু পেশা তা নয়। বরং হকারদের থেকে ভয় দেখিয়ে তোলা আদায় করাই তার পেশা। আর তাই করেই কোটি কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি-গয়না সন্তোষ কুমার ওরফে বাবলু ঠাকুরের।
গত মে মাসে তোলাবাজির অভিযোগে সন্তোষকে মহারাষ্ট্র থেকে গ্রেফতার করে জিআরপিএফ। রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় বাইকে করে সন্তোষের গাড়ি তাড়া করে তার কাঁচ ভেঙে তাকে পাকড়াও করেন পুলিশ কর্মীরা।
অন্যদিকে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর সময়ে ধরা হয় সন্তোষের স্ত্রীঁ'কে। গ্রেফতার করা হয় ৬ সঙ্গীকেও। তারপরেই তাদের সম্পত্তির খতিয়ান নিতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয় পুলিশকর্মীদের।
এখনও পর্যন্ত যা যা জানা গিয়েছে:
সন্তোষ ও তার স্ত্রীর নামে মুম্বইয়ের মতো দামী জায়গাতেই মোট ১০টি ফ্ল্যাট-বাংলো আছে। আছে দুটি কোটি টাকার লাক্সারি কার। একটি দামি মোটরসাইকেলও আছে।
সন্তোষের আদি বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। সেখানেও দুটি বিশাল জমি ও একটি পাঁচ একরের কৃষিজমি আছে তার। আছে দেড় কেজি সোনাও। এছাড়া প্রায় ৩০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে তার নামে। রয়েছে ১০ লক্ষ টাকার বিমা।
কীভাবে এত টাকা?
মুম্বইয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রত্যেক হকার বাবলু ঠাকুরের নাম শুনলেই কাঁপতে শুরু করেন। দাদর, ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস, বাইকুল্লা, কুরলা, থানে ইত্যাদি স্থানে ছড়িয়ে বাবলুর গুন্ডা-মস্তানরা।
হকারদের অভিযোগ, দৈনিক মোটা টাকার তোলা দিতে হয় তাঁদের। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার উপর ধারাল অস্ত্রের কোপ, বেধড়ক মারধর, অত্যাচারের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি এমনই যে কেউ পুলিশে অভিযোগ করতেও ভয় পান। 'মুম্বইয়ে হকারি করতে হলে বাবলু ঠাকুরকে তোলা দিতে হবে। সবাই সেটাই মেনে নিয়েছিলেন,' বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার।
দাদার জিআরপিএফ-এর এক আধিকারিক জানান, যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। সম্পত্তির খতিয়ানও করা হবে। শুধু তোলাবাজি করেই এই বিপুল টাকা নাকি আরও কোনও সূত্র আছে, তার খোঁজে তদন্ত শুরু হয়েছে।