উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন ২০২২ ঘিরে ক্রমাগতই পারদ চড়ছে যোগীগড়ে। প্রচারে ঝড় তুলতে একাধিক তারকা নেতারা বিভিন্ন সভা সমিতিতে ব্যস্ত। এদিকে, শুক্রবার অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদিুল মুসলিমিন-এর তরফে আসাদউদ্দিন ওয়েইসি মুখ খোলেন উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে। শুক্রবার তিনি সংখ্যালঘু ইস্যুতে বিজেপি থেকে শুরু করে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি , কংগ্রেসকে একহাত নেন।
আর খানিকক্ষণের অপেক্ষা। তারপরই ২০২২ এর একাধিক রাজ্যে হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার কথা। এদিকে, তার আগে শুক্রবার এক সভায় যোগ দিয়ে মিম-এর নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, উত্তরপ্রদেশের বুকে পর পর সমস্ত পার্টির সরকারের আওতাতেই মুসলিমরা বৈষম্য ও শোষণের শিকার হয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিজেপি, সমাজবাদী পার্টি বা বহুজন সমাজবাদী পার্টি কাউকেউ একহাত নিতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের কোনও উন্নতি হয়নি। মিম-এর তরফে উত্তরপ্রদেশে আয়োজিত, 'মুসলিম ইন উত্তরপ্রদেশ' শীর্ষক এক সভায় যোগ দিয়ে কার্যত বিরোধী পক্ষের সমস্ত কয়টি দলকে একহাত নেন ওয়েইসি। এই অনুষ্ঠানে উত্তরপ্রদেশের মুসলিমদের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়। আর সেই প্রেক্ষাপটে বক্তব্য রাখতে গিয়েই কার্যত গোবলয় রাজনীতিতে যে পার্টিগুলি বিভিন্ন সময়ে উত্তরপ্রদেশের মসনদে এসেছে সেই সমস্ত কয়টি পার্টিকেই নিশানায় রাখেন ওয়েইসি। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্যসরকারের তরফে যে নথি এসেছে , তার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ওয়েইসির বার্তা, রিপোর্টে ইঙ্গিত রয়েছে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রশাসন, সরকার, শিক্ষা, ব্যবসা , চাকরি , এমনকি ওয়েলফেয়ার স্কিম থেকেও বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন মুসলিমরা। এই মর্মে বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' এর স্লোগান থাকলেও গত ৫ বছরে উত্তরপ্রদেশে বিভিন্নভাবে অবহেলা করা হয়েছে মুসলিমদের। উত্তরপ্রদেশে ১৯.২৫ শতাংশ মুসলিমদের দারিদ্রতার ছবি যে এবারের নির্বাচনে হাইলাইট করতে চলেছে মিম, সেকথা জানিয়েছেন মিম প্রধান ওয়েইসি।
উল্লেখ্য, একাধিক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের তৈরি নথিতে মুসলিমদের অবস্থার কথা তুলে ধরেছে মিম এর এই রিপোর্ট । সেখানে বলা হচ্ছে, ১৫ বছরের উপর ৭১.২ শতাংশ মুসলিম অশিক্ষিত বা প্রাথমিক শিক্ষার নিচে রয়েছেন। মিম-এর তরফে পেশ করা ওই নথিতে বলা হচ্ছে, ৪৮.০৫ শতাংশ মুসলিম পরিবারের কাছে জমি নেই। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের ২৫.৬ শতাংশ মুসলিম নিত্যদিনের পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কর্মরত বলে তুলে ধরছে রিপোর্ট। এই রিপোর্টের মর্মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির থেকে জবাব দাবি করেছে মিম।
এদিনের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ওয়েইসি বলেন, ' ক্ষমতায় মুসলিমদের আসা, প্রশাসনে মুসলিমদের আসা এবং ওয়েলফেয়ার স্কিমে তাঁদের অবস্থার উন্নতি করা নিয়ে দাবি তুলব আমরা। আমরা মুসলিমদের প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাবি তুলব।' একই সঙ্গে তিনি এই মঞ্চ থেকে দাবি করেন, বারবার উত্তরপ্রদেশের বুকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কেবলেই মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করেছে। যা রোধ করতে এবার যোগীরাজ্যে সোচ্চার হওয়ার ডাক দিয়েছেন মিম প্রধান।