করোনা সংক্রমণের মাঝে পরিযায়ী শ্রমিক সমস্যার যথাযথ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবার এই মন্তব্য করল বম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এ দিন বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অনুজা প্রভুদেশাইয়ের বিভাগীয় বেঞ্চ জানিয়েছে, এক সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরাতেও আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে লকডাউনে মহারাষ্ট্রে আটকে পড়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থায় গাফিলতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টে মামলা করে মুম্বইয়ের সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস। পাশাপাশি, শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁদের রাজ্যে ফেরানোর ব্যাপারে মহারাষ্ট্র সরকারের উদ্যোগ জটিল এবং তার সরলীকরণ প্রয়োজন।
গত জুন মাসে আদালতকে মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে জানানো হয় যে, বর্তমানে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের চাহিদা ফুরিয়েছে। এ দিন হাইকোর্টকে আবেদনকারীর আইনজীবী গায়ত্রী সিং জানান, সরকারের এই উক্তি ‘অসত্য’। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রে এখনও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া প্রায় ৫৬,০০০ পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে ইউনিয়নের তরফে দেখা করা হয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন বাংলার শ্রমিকও রয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘আপনারা পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি সম্পর্কে খবর রাখেন? এক সময় রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের লরাজ্যে ফেরার অনুমতিও দেয়নি। আমরা কারওএ বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না, কিন্তু ওই রাজ্যে পরিস্থিতি সঠিক ভাবে সামলানো হয়নি।’
উদাহরণ হিসেবে মহারাষ্ট্রের রত্নাগিরিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বাংলার ৩০ জন শ্রমিকের কথা বলেন বিচারপতি দত্ত। রাজ্ সরকারের সাহায্যের অপেক্ষায় না থেকে তাঁরা নিজ উদ্যোগে বাসভাড়া করে পশ্চ্িমবঙ্গে ফিরেছিলেন বলে তিনি জানান।
মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল অশুতোষ কুম্ভকোনি আদালতকে জানান, এমনই পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত একটি মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। তবে হাই কোর্ট জানায়, গত ৯ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া ওই মামলার রায়ে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বিষয়টি শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র কেন্দ্রিক। এই বিষয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের কিছু ব্যর্থতার কথাও জানিয়েছে আদালত।