টাটানগর যাওয়ার পথে স্বামীর উপস্থিতিতেই আসানসোল স্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে তিন বছরের শিশুকন্যা-সহ উধাও হয়ে গেলেন বছর চব্বিশের বধূ। ঘটনায় অপহরণের অভিযোগদায়ের করেছেন হতবাক স্বামী। ফের প্রশ্ন উঠেছে রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে।
বৃহস্পতিবার টাটানগরমুখী ছাপরা-টাটা ফেস্টিভ্যাল এক্সপ্রেস থেকে উধাও হয়ে গিয়েছেন সমস্তিপুরের বাসিন্দা পূজা ঝা নামে ওই যুবতী। তাঁর সঙ্গেই হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর তিন বছরের মেয়ের। নিখোঁজ যুবতীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা সুইচড অফ জানা গিয়েছে। বাধ্য হয়ে জিআরপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন যুবতীর আত্মীয়রা।
পুলিশ জানিয়েছে, ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সমস্তিপুর স্টেশন থেকে ট্রেনের স্লিপার কামরায় স্বামী সন্দীপ ঝা, শিশুকন্যা এবং কয়েক জন আত্মীয়কে নিয়ে ওঠেন ওই বধূ। মাঝরাতে স্ত্রী ও শিশুর কান্না শুনে ঘুম ভাঙে স্বামীর। কিন্তু নিজের বার্থ থেকে নেমে এসে অনেক খুঁজেও কামরায় তাঁদের দেখতে পাননি স্বামী। গোটা ট্রেনে তল্লাশি চালিয়েও তাঁদের হদিশ পাননি আত্মীয়রা।
শেষ পর্যন্ত টাটানগর স্টেশনে পৌঁছে জিআরপি-র কাছে অভিযোগ নথিভুক্ত করেন নিখোঁজ মহিলার স্বামী। তাঁর সন্দেহ, স্ত্রী ও সন্তানকে অপহরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খোয়া গিয়েছে তাঁদের সঙ্গে থাকা মালপত্র, নগদ টাকা, এটিএম কার্ড, সোনার গয়না এবং মোবাইল ফোন।
টাটানগর জিআরপি থানা থেকে অভিযোগটি আসানসোল জিআরপি থানায় নথিভুক্তিকরণের জন্য পাঠানো হয়েছে। কী ভাবে ট্রেন থেকে আত্মীয়দের সামনেই উধাও হলেন যুবতী ও তাঁর শিশুকন্যা, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি টাটানগর জিআরপি।
সন্দীপ জানিয়েছেন, গত ৩১ নভেম্বর নরসিংগাদে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে সমস্তিপুরে পৌঁছেছিলেন পূজা ও তাঁর মেয়ে। ১ ডিসেম্বর সেখানে পৌঁছন সন্দীপ নিজেও, কিন্তু পরের দিনই তিনি তাঁদের নিয়ে ফিরতি ট্রেন ধরেন। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ট্রেন বারাউনি স্টেশন অতিক্রম করে যাওয়ার সময় তাঁরা রাতের খাওয়া খান। এর পর কামরায় ৩৯ নম্বর বার্থে শুতে যান সন্দীপ এবং ৩২ নম্বর বার্থে মেয়েকে নিয়ে শুতে যান পূজা।
সন্দীপের দাবি, ‘সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল এবং ওদের এ ভাবে উধাও হয়ে যাওয়ারকোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল সন্দীপ ও পূজা বিয়ে করেছিলেন।
এ দিকে আসানসোল জিআরপি জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্য দিকে হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তীও জানান, ঘটনাটি অপহরণ কি না, তা এখনই নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়।