জৈষ্ঠ্য শুক্লের একাদশী তিথিতে নির্জলা একাদশী ব্রত পালিত হয়। চলতি বছর ২১ জুন নির্জলা একাদশী। পুরাণ মতে, একে ভীমসেন একাদশী, পাণ্ডব একাদশী ও ভীম একাদশীও বলা হয়। নির্জলা থেকে এই একাদশী ব্রত পালিত হয়, তাই একে নির্জলা একাদশীও বলা হয়। উপবাস পুরো হওয়ার পর জল গ্রহণের বিধান রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী যে ব্যক্তি নির্জলা একাদশী উপবাস রাখে, সে বছরের সমস্ত একাদশী ব্রতর সমান পুণ্য ফল লাভ করে। এই উপবাস যে রাখে, সে বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভ করে। একাদশী তিথিতে এই উপবাস রাখা হয়, দ্বাদশী তিথির দিনে বিধি মেনে ব্রত ভঙ্গ করা হয়।
নির্জলা একাদশীর শুভক্ষণ
একাদশী তিথি শুরু- ২০ জুন সন্ধে ৪টে ২১ মিনিটে
একাদশী তিথি সমাপ্ত- ২১ জুন দুপুর ১টা ৩১ মিনিটে
ব্রত ভঙ্গের সময়- ২২ জুন, ২০২১ সকাল ৫টা ১৩ মিনিট থেকে ৮টা ০১ মিনিট পর্যন্ত।
নির্জলা একাদশী ব্রত বিধি
প্রাতঃকালে তাড়াতাড়ি উঠে স্নান করে ব্রতর সংকল্প নেওয়া উচিত। এর পর বিষ্ণুর পুজো করুন। পুরো দিন বিষ্ণুর স্মরণ ও ধ্যান করা উচিত। পুরো দিন ও এক রাত উপবাস রেখে পরের দিন সকালে সূর্যোদয়ের পর পুজো করে দরিদ্র, ব্রাহ্মণদের দান বা ভোজন করান। এর পর ঈশ্বরকে ভোগ নিবেদন করে প্রসাদ গ্রহণ করুন।
নির্জলা একাদশীর মাহাত্ম্য
ধর্মীয় ধারণা অনুযায়ী, ব্যক্তি যদি শ্রদ্ধার সঙ্গে এই একাদশী ব্রত করে, তা হলে সে সমস্ত একাদশী ব্রতর ফলে প্রাপ্ত পুণ্য লাভ করে। সমস্ত কষ্ট থেকে মুক্তি পায় সেই ব্যক্তি। ব্রতর পাশাপাশি এদিন দানও করা হয়। দান করলে পুণ্য লাভ সম্ভব। এদিন ঘট দান করা অত্যন্ত শুভ। এর ফলে ব্যক্তি সুখী জীবন ও দীর্ঘায়ু লাভ করে।
নির্জলা একাদশী ব্রত কথা
পুরাণ মতে, মহাভারত কালে পাণ্ডু পুত্র ভীম মহর্ষি বেদব্যাসকে জিগ্যেস করেন- হে পরম আদরণীয় মুনিবর! আমার পরিবারের সকলে একাদশী ব্রত পালন করে এবং আমাকেও এই ব্রত করতে বলে। কিন্তু আমি ক্ষুধার্ত থাকতে পারি না। অতএব আপনি আমাকে জানান যে, উপবাস না-করে একাদশী ব্রতর ফল কী ভাবে লাভ করা যেতে পারে। ভীমের অনুরোধে বেদব্যাস বলেন- পুত্র! তুমি জৈষ্ঠ্য শুক্লপক্ষের একাদশীর দিনে নির্জলা উপবাস কর। এদিন অন্ন-জল ত্যাগ করতে হয়। যে ব্যক্তি একাদশী তিথির সূর্যোদয় থেকে দ্বাদশী তিথির সূর্যোদয় পর্যন্ত নির্জলা থাকে ও শ্রদ্ধা-সহ নির্জলা ব্রত পালন করে, সে বছরে সমস্ত একাদশীর ফল এই একটি একাদশী উপবাস করেই লাভ করতে পারে। তখন বেদব্যাসের আজ্ঞায় ভীম নির্জলা একাদশী পালন করে।